চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিষ্ফোরণের আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সকাল এবং দুপুরে তাদের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে একজন ঢাকায় ও একজন চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ৪৮ জনের মৃত্যু হয়।
জানা যায়, বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে গাউছুল আজম (২২) নামে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী মারাত্মকভাবে আহত হন। ওই দিনই তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। আটদিন পর তিনি রবিবার ভোরে লাইফ সাপোর্টে মারা যান।
নিহত গাউসুল আজম যশোর জেলার মনিরামপুর গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। তার ৬ মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান আছে। চাকরিতে যোগদান ২০১৮ সালে।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, গাউছুল আজমের শরীরের ৭০ শতাংশই দগ্ধ ছিল। আগুনে পুড়ে গিয়েছিল তার শ্বাসনালী। বর্তমানে ১৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে দুইজন।
এদিকে, সীতাকুণ্ডের ঘটনায় রবিাবর দুপুর ২টায় নুরুল কাদের (২২) নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়। বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত নুরুল কাদের বিএম কনটেইনার ডিপোতে গাড়ির মেকানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি বাঁশখালীর পূর্ব চেচুরিয়ার একেএম ফাইজুর রহমান চৌধুরীর ছেলে।
পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এটিএম রেজাউল করিম বলেন, রবিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরুল কাদের নামের আহত একজনের মৃত্যু হয়। আগুনে তার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে যায়। সকাল থেকে তার কন্ডিশন ভালো ছিল না। তাকে লাইফ সাপোর্টও দেওয়া হয়েছিল।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডে বিষ্ফোরণের ঘটনায় বর্তমানে চারটি হাসপাতালে মোট ৭৪ জনের চিকিৎসা চলছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৫৪ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১০ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১ জন এবং পার্ক ভিউ হাসপাতাল ৯ জন।
প্রসঙ্গত, গত ৪ জুন শনিবার রাত ৯টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকার বিএম কনটেইনারে বিষ্ফোরণের ঘটনায় মোট ৪৮ জন মারা যান এবং আহত হন তিন শতাধিক। আহতদের মধ্যে সংকটাপন্ন অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৯ জনকে শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। নিহতদের মধ্যে ২৭ জনের মরদেহ শনাক্ত হওয়ায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ১৯ জনের মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। ইতোমধ্যে ডিএনএ টেস্টের জন্য অজ্ঞাতদের স্বজনদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন আসলে শনাক্ত হওয়ার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন