একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় বহাল রাখার পর এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, মীর কাসেমের মতো সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে রায়ের পর তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু সংগঠন এমন ভাব দেখাচ্ছে যে তারাই বিচারের সব করছে।
মাহবুবে আলম বলেন, আজ মীর কাসেমের রায় দিতে পাঁচজন বিচারপতির বসার কথা ছিলো। সেখানে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে নয়জনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ বসানো হয়। এ সময় প্রধান বিচারপতি জানান, বিচার বিভাগ নিয়ে দু’জন মন্ত্রীর বক্তব্যে তিনি খুবই মর্মাহত। তাদের আদালতে হাজির হতে হবে। তাদের বক্তব্যের জন্য কেন তাদের দণ্ডিত করা হবে না তা জানতে চাওয়া হবে।
মাহবুবে আলম আরও বলে, প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই বলে দিয়েছেন এটা সরকারের বক্তব্য নয়। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এ বিচার হচ্ছে। এটা নির্বাচনের আগেই শেখ হাসিনা সরকারের ইশতেহার ছিল। সে অনুযায়ীই বিচার হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল নয়টায় দেশের এই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে করা তার আপিল আবেদন আংশিক খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
এর আগে শুনানি শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার এ দিন ধার্য করা হয়। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, আসামিপক্ষে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং এস এম শাহজাহান শুনানিতে অংশ নেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সর্বোচ্চ এ দণ্ড দেওয়া হয় তাকে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের এই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির বিরুদ্ধে মোট ১৪ অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালে। এই আদালতে প্রমাণিত ১০ অভিযোগের মধ্যে একাদশ অভিযোগে সর্বসম্মতভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও দ্বাদশ অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয় মীর কাসেমকে। অন্য আট অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে তাকে দণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি চারটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। কারাগার থেকে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মীর কাসেম। গত ৯ ফেব্রুয়ারি আপিলের শুনানি শুরু হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৮ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা