আশুলিয়ায় এক কলেজ ছাত্রীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বখাটেরা ওই ছাত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
এ ঘটনায় সকালে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে গত রবিবার বিকেলে আশুলিয়ার বুড়িবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কলেজ ছাত্রীর পরিবার জানায়, আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন আকাশ দীর্ঘ দিন যাবৎ কলেজ ছাত্রীকে উত্যক্ত করে আসছিল। এ বিষয়ে একাধিকবার ওই বখাটের বাবা ও সাবেক যুবলীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে বখাটে ছেলেটি এর পরও কলেজ ছাত্রীকে উত্যক্ত করে আসছিল। এ বিষয়ে কোন প্রতিবাদ করলে উল্টো স্থানীয় ওই যুবলীগ নেতার প্রভাব দেখিয়ে কলেজ ছাত্রীর বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিতে থাকে।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে বুড়িবাজার এলাকায় গিয়ে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকেই উৎ পেতে থাকা বখাটেরা কলেজ ছাত্রীকে উত্যক্ত করা শুরু করে। এক পর্যায়ে বখাটে আকাশ কলেজ ছাত্রীর হাত ধরে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় কলেজ ছাত্রী নিজেই প্রতিবাদ করে। পরে বখাটে আকাশ ক্ষিপ্ত হয়ে বুড়িবাজার এলাকায় প্রকাশ্যে ওই কলেজ ছাত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তার পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় সোমবার সকালে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমজাদুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হাতে আঘাত নিয়ে মারুফা আক্তার এখানে ভর্তি হয়। পরে একদিন চিকিৎসা নিয়ে সে বাড়ি চলে গেছে।
এই ঘটনার ছেলের বাবা সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন এই মেয়ে আমার ছেলেকে জোর করে বিয়ে করার জন্য বিভিন্ন রকম হুমকি দেয় ।
এই ব্যাপারে সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন বেশকিছুদিন আগে ফেসবুকের মাধ্যমে মারুফা আক্তারের সাথে আমার পরিচয় হয়। পরে আমাদের মাঝে কথা ও ম্যাসেজ আদান প্রদানের একপর্যায়ে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আমি তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে সে আমার নামে ভুয়া আইডি খুলে সেখানে উল্টা-পাল্টা ছবি আপলোড করে মানহানির চেষ্টা করে। এঘটনায় আমি আশুলিয়ার থানায় ৮ মাস আগে একটি সাধারন ডায়েরী (৭৩৯) করি এবং তার জ্বালা সইতে না পেরে আমি সাভার পাবলিক কলেজ ছেড়ে চলে আসি।
আশুলিয়া থানা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই মেয়ে আমার ভাতিজাকে বিরক্ত করে। এ কারণে তার ভাতিজা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করেছে। কিন্তু কলেজ ছাত্রীর পরিবার ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য বিভিন্ন মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আউয়াল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আকাশের বিরদ্ধে নারী নির্যাতন ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডিপ্রতিদিন/ ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান