রংপুরে চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবু সোনা নিজের স্ত্রীর হাতে হত্যার ঘটনাকে সমাজ ও পারিবারিক বন্ধনের ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার স্ত্রী দীপা ভৌমিককে মৃত্যদণ্ডের রায় ঘোষণার পর রায়ের পর্যবেক্ষণে রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র বিচারক এবিএম নিজামুল হক একথা বলেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ড অন্য দশটি হত্যাকাণ্ড থেকে একেবারে ভিন্ন। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক আমাদের সমাজে আস্থা-বিশ্বাস ও ভালোবাসার সম্পর্ক। যা আমাদের পারস্পরিক বন্ধন আরও দৃঢ় করে। স্ত্রী হয়েও আস্থা-বিশ্বাস ভেঙে স্বামীকে হত্যা করা মানবতা ও নৈতিকতাবিরোধী কাজ। এ ঘটনা আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধনকে আঘাত করেছে, যা সমাজের জন্য হুমকি।
এর আগে, রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবু সোনা হত্যার দায়ে তার স্ত্রী দীপা ভৌমিক ওরফে স্নিগ্ধাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
আলোচিত রথীশ চন্দ্র হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ছিলেন রথীশ চন্দ্রের স্ত্রী দীপা সরকার ওরফে স্নিগ্ধা ও স্নিগন্ধার প্রেমিক কামরুল ইসলাম। কিন্তু গত বছরের ১০ নভেম্বর ভোরে কামরুল ইসলাম কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ মার্চ রথীশ চন্দ্র ভৌমিক নিখোঁজের পাঁচদিন পর রথীশের বাড়ি থেকে কিছু দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়ায় একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে বালুচাপা দেওয়া মরদেহ উদ্ধার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরে রথীশের ভাই সুশান্ত ভৌমিক মরদেহটি শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় বাদী হয়ে থানায় মামলাও করেন তিনি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৯ মার্চ রাত ১০টার দিকে রংপুর মহানগরীর তাজহাট বাবুপাড়ায় অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ভৌমিক, তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম ও তার সহযোগী মিলন মোহন্ত। এরপর রথীশের বিছানায় দীপা ও কামরুল রাত কাটায়। তারা পরের দিন ৩০ মার্চ সকাল ১১টার মধ্যে দিনের আলোতে বাড়ির আলমারিতে মরদেহ ভর্তি করে বাইরে বের করে গুমের উদ্দেশে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখে।
বিডি-প্রতিদিন/২৯ জানুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব