১২ নভেম্বর, ২০১৯ ১৭:১১
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

অধ্যক্ষকে পুকুরে নিক্ষেপ; ছাত্রলীগের আরও ৪ কর্মী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী:

অধ্যক্ষকে পুকুরে নিক্ষেপ; ছাত্রলীগের আরও ৪ কর্মী গ্রেফতার

ফাইল ছবি

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে লাঞ্ছিত এবং পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগের আরও চার কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রাজশাহী মহানগরীর সিপাইপাড়ার বাহারাম বাদশার ছেলে মাহাবুব হোসেন (১৯), একই এলাকার সাহেদ আলীর ছেলে নাঈম ইসলাম (১৯), নূর হোসেনের ছেলে মামুন হোসেন শিপন (২০) এবং শিরোইল কলোনি এলাকার কামরুজ্জামানের ছেলে নাইমুজ্জামান (১৯)। এরা সবাই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস মঙ্গলবার দুপুরে এদের গ্রেফতারের  বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের দায়ের করা মামলায় মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হলো। জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, মিডটার্মে ফেল এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্মসম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে গত ২ নভেম্বর শনিবার সকালে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের কার্যালয়ে গিয়ে চাপ দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে ওইদিন দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার পর টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া হয়। এ নিয়ে রাতে মামলা করেন অধ্যক্ষ। এ ঘটনায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনকে আসামি করে ওই রাতে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন অধ্যক্ষ। 

এদিকে ঘটনা তদন্তে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান হিসেবে ছিলেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পিআইডব্লিউ) এসএম ফেরদৌস আলম। অন্য দুই সদস্য হলেন- কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (কারিকুলাম) ড. নুরুল ইসলাম এবং রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওমর ফারুক। তারা দুই দিন ক্যাম্পাসে অবস্থান করে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পুকুরের পানির গভীরতা পরীক্ষা করেন। 

তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একটি টর্চার সেলেরও সন্ধান পায়। অবশেষে গত ৭ নভেস্বর বৃহস্পতিবার বিকালে কমিটির প্রধান কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক এসএম ফেরদৌস আলম মহাপরিচালক রওনক মাহমুদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। 

এছাড়া ২ নভেম্বর রাতেই ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে ঘটনাটি তদন্ত করছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ। তিনদিনের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা শেষ হয়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। একইসঙ্গে রাজশাহী পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর