করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশে চলছে লকডাউন। এ কারণে রংপুর বিভাগের প্রায় ৫ লাখ কৃষি মৌসুমি শ্রমিক চলতি মৌসুমে বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ে অংশ নিতে দেশের অন্য জেলাগুলোতে যেতে পারছে না। ফলে করোনা দুর্যোগে আড়াই’শ কোটি টাকা বাড়তি আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে এ অঞ্চলের মৌসুমি শ্রমিকরা।
গত কয়েক মৌসুম থেকে কৃষি শ্রমের মূল্য ৫ গুণ বৃদ্ধি হওয়ায় শ্রমিকরা ধান কাটা মাড়াই করে সংসারে সচ্ছলতা আনেন। তবে কৃষি বিভাগ বলেছে করোনা দুর্যোগে এ পর্যন্ত ৪ হাজার শ্রমিক দেশের অন্যত্র ধান কাটতে গিয়েছেন।
রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চলে সাড়ে ৫ লাখের ওপর মৌসুমি শ্রমিক রয়েছে। এসব মৌসুমি শ্রমিক ধানের মৌসুমে শুধু নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় গিয়ে কাটা মাড়াই করে বাড়তি আয় করে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে বোরো মৌসুমেই এই বিভাগে প্রায় ৫ লাখ মৌসুমি শ্রমিক আড়াইশ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অন্য সময়ে এসব শ্রমিক শহরে রিকশা, ভ্যান অথবা অন্য কোনো পেশা গ্রহণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দিন হাজিরায় যেসব শ্রমিক কাজ করত তাদেরও মজুরি বেড়েছে কয়েকগুণ। ৫ বছর আগে দেড়শ টাকায় যে শ্রমিক দিন হাজিরায় কাজ করত এখন তারা ৫০০ টাকার নিচে কাজ করেন না। কোন কোন স্থানে তিন বেলা খাওয়াসহ এই হাজিরা পান। তবে এবার করোনা ও লকডাউনের কারণে মৌসুমি কৃষি শ্রমিকরা বাড়িতেই রয়েছেন। তারা অন্য জেলায় ধান কাটা মাড়াই করতে যাননি।
মিঠাপুকুরের মৌসুমি শ্রমিক হাবিবুর, আশরাফুল, রংপুর সদরের পরশুরাম ইউনিয়নের আমিন, মন্টু মিয়া গঙ্গাচড়ার গান্নারপাড় এলাকার মিজানুর, নীলফামারীর জলঢাকার অলিয়ার মিয়াসহ অনেকেই জানালেন প্রতিবছর অন্য জেলায় গিয়ে ধান কাটা মাড়াই করে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক খন্দকার আব্দুল ওহাব জানান, এ পর্যন্ত ৪ হাজারের মত শ্রমিক ধান কাটতে দেশের অন্যান্য স্থানে গিয়েছে। আরও শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর