রাজশাহীতে ফুরিয়ে এসেছে করোনার ভ্যাকসিনের মজুদ। নতুন করে ভ্যাকসিন না আসলে আগামীকাল বৃহস্পতিবারই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শেষ হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজের করোনা টিকা প্রদান কর্মসূচি। তবে রাজশাহীর উপজেলা এলাকাগুলোর জন্য ভ্যাকসিন আছে। তাই রাজশাহীর নয় উপজেলায় ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।
এর ফলে ভ্যাকসিন না আসলে দ্বিতীয় ডোজ নিতে বিড়ম্বনায় পড়বেন অনেকে। তবে এখনই হতাশ না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণের জন্য এরই মধ্যে রাজশাহীসহ বিভাগের আট জেলার জন্যই স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে আরও ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছে। নতুন চালান চলে আসলে আর কোনো সংকট থাকবে না। আগের নিয়মেই রাজশাহী জেলাসহ বিভাগের অন্যান্য জেলায় দ্বিতীয় ডোজের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
কারণ প্রথম দিকে তেমন সাড়া না পাওয়া গেলেও পরে ভ্যাকসিন নিয়ে মানুষের মধ্যে দ্বিধা দ্বন্দ্ব কেটে যায় এবং সবাই ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে সমানভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এজন্য ধীরে ধীরে করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন নিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ প্রতিটি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রত্যাশীদের ভিড় বাড়ে। তাই প্রথম দিকে করোনা টিকা নিতে নানানভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয় সাধারণ মানুষকে। তবে প্রথম ডোজের পর, দ্বিতীয়টি নিতে সবার চাপ বেড়ে যায়।
রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয় ও রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ রাজশাহী বিভাগে প্রথম ডোজ নিয়েছে। আর এ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে সোয়া দুই লাখেরও বেশি ভ্যাকসিন প্রত্যাশী মানুষ। তবে, মজুদ ফুরিয়ে আসায় ঈদের আগে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এবং ঈদের পরে জেলা ও উপজেলা এলাকায় ভ্যাকসিন দেয়া নাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ভ্যাকসিন আসার পর যা মজুদ ছিল তা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হচ্ছে। তবে নতুন করে ভ্যাকসিন না আসলে আগামীকাল বৃহস্পতিবারের পর থেকে হয়তো আর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না। তবে উপজেলা পর্যায়ে চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিন আছে। তাই উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সিটি কর্পোরেশন এলাকার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। সে তুলনায় মজুদ ফুরিয়ে আসায় বৃহস্পতিবারের পর ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব নাও হতে পারে। বিষয়টি এরইমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। তাই এ সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন এসে পৌঁছালে দ্বিতীয় ডোজ চলবে। না হলে আপাতত বন্ধ থাকবে বলেও উল্লেখ করেন রাজশাহী সিভিল সার্জন।
এদিকে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ভ্যাকসিন ইস্যুতে গত রবিবার (২৫ এপ্রিল) মাঠ পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। ওই বৈঠকে রাজশাহী বিভাগের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
এসময় চাহিদা অনুযায়ী আরও ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছে। বিভাগের আট জেলার জন্য আপাতত মাত্র দেড় লাখ ডোজ মজুদ আছে। করোনা প্রতিরোধে নিরবচ্ছিন্নভাবে এই কার্যক্রম চালাতে হলে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনের মজুদ বাড়ানোর ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত