আজ সকাল সাড়ে ১১টায় নাগরিক ঐক্যের ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি করেছে নাগরিক ঐক্য। দলের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে এই র্যালিতে নাগরিক ঐক্য, যুব ঐক্য, ছাত্র ঐক্য, নারী ঐক্য, ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, গাজীপুর জেলা, নারায়ণগঞ্জ জেলা, নরসিংদী জেলার নেতৃবৃন্দের ব্যানারে সহস্রাধিক নেতাকর্মী যুক্ত হন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম এ কবীর হাসান বলেন, সারাদেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, আলোচনা, র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে, হচ্ছে। নাগরিক ঐক্য জুন মাসে দলে যোগদান অনুষ্ঠান, বাজেট আলোচনাসহ আরও আয়োজন করবে, এবং শীঘ্রই তা জানাবে। গতকাল চট্টগ্রামে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আজকের পূর্বঘোষিত র্যালির জাঁকজমক প্রত্যাহার করে অনাড়ম্বরভাবে পালিত হয়।
বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চয়তা প্রদান, দেশকে উদারগণতান্ত্রিক কল্যাণরাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ২০১২ সালের ১ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় নাগরিক ঐক্য। ২০১৭ সালের ১ জুন জাতীয় রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠা সংগঠনটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যুক্তফ্রন্ট গঠন (২০১৮), ঐক্যফ্রন্ট গঠন (২০১৮) ও জাতীয় নির্বাচন, গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন (২০১৯), করোনা মহামারি সময়ে জনগণের দাবি আদায়ে সোচ্চার থাকা (২০২০-২১), প্রভৃতি ক্ষেত্রে গণমানুষের দাবি নিয়ে জাতির বৃহত্তম স্বার্থ বাস্তবায়নে ত্যাগ-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে সক্রিয় বিরোধীদলের দায়িত্ব পালন করে নাগরিক ঐক্য। বেকার মুক্তি আন্দোলনে (২০১৯) দলের অঙ্গসংগঠন নাগরিক যুব ঐক্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনে (২০১৮) নাগরিক ছাত্র ঐক্য, তেল-গ্যাস-দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে নাগরিক নারী ঐক্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
র্যালি প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে কদম, পুরানা পল্টন, ভিজয়নগর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রেসক্লাবে এসে দলীয় প্রধানের বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়। র্যালিতে নেতাকর্মীগণ স্বৈরাচার পতন, গণতন্ত্র আনয়ন, নাগরিক ঐক্যে যোগদান, ও কল্যাণরাষ্ট্র প্রত্যয় নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
এ সময় নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিন্নুর চৌধুরী দিপু, মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নঞ্জুর কাদির, লাকি বেগম, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান খসরু, দক্ষিণের আহ্বায়ক মাহাবুব সুমন, নারী ঐক্যের সদস্য সচিব ফেরদৌসি আক্তার, এস এম এ কবীর হাসান, সাকিব আনোয়ার, রাজ্জাক সজীব, আব্দুর রাজ্জাক, লুতফুন্নাহার মিনু, মহিদুজ্জামানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এ-সময় নাগরিক যুব ঐক্যের সভাপতি ইকবাল হোসেন সাম্য, সাধারণ সম্পাদক জহির হোসেন, ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে মানুষের কষ্টের জন্য সরকারের দুর্নীতি অবহেলাকে দায়ী করেন। তিনি পদ্মাসেতুকে সারাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বলে উল্লেখ করে বলেন, সরকার পারতো সকল নেতৃবৃন্দকে নিয়ে পদ্মাসেতু উদ্বোধন করতে। তা না করে তারা বলে, আইনি ঝামেলা না হলে খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানাবে। ১২ হাজার কোটি টাকার সেতু দুর্নীতি করে ৪৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে তারা। আগামীতে নাগরিক ঐক্যের কল্যাণরাষ্ট্র গড়ার জন্য জনগণকে নাগরিক ঐক্যের রাজনীতিতে যোগ দিতে আহ্বান করেন তিনি। উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীর রাজপথের আন্দোলনে সমবেত হতে বলে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ