১৯ আগস্ট, ২০২২ ২০:০১

বাড়াবাড়ি করবেন না, মা বইলা গো বলার সময় পাবেন না : শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

বাড়াবাড়ি করবেন না, মা বইলা গো বলার সময় পাবেন না : শামীম ওসমান

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন একেএম শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, যারা রাস্তা দখলের হুমকি দেয় তাদের বলতে চাই রাজপথ শেখ হাসিনার দখলেই থাকবে। আমাদের শরীরের রক্ত টগবগ করে। তাদের দায়িত্ব শেষ। তারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে দিয়েছে। এখন যদি বলে একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার আপনারা কী আঙুল চুষবেন। আমরা কী নারায়ণগঞ্জে বসে দেখব শুধু। আবারও বলব। গোলাম আজমকে বলেছি, পঙ্গু হয়েছি। আমাকে মারা চেষ্টা হচ্ছে। ষড়যন্ত্র ভেতরে বাইরে থেকে সবদিক থেকেই হচ্ছে। 

শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ডিআইটি মাঠে শোক দিবসের জনসভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন শামীম ওসমান। 

শামীম ওসমান বলেন, এই সংকটে তারা আঘাত করবে। ক্ষমতায় আসা তাদের মূল টার্গেট না। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। ওই যে চতুর্দিক কথাটা, এর মানে ঘরে বাইরে সব জায়গায় আছে। আজ যদি শেখ হাসিনার কিছু হয়। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ না, তিনি আগামী দিনের বাচ্চাদের ভবিষ্যত। তাকে আঘাত করলে এ দেশ এমন জায়গায় যাবে যেখান থেকে আমরা আদৌ উঠে আসতে পারব কীনা জানি না। 

তিনি বলেন, রাস্তায় স্লোগান হয়। এমন বাজে ভাষা। এরা কোন মায়ের পেটে জন্ম নিয়েছে জানি না। আমরাও তো খালেদা জিয়ার সমালোচনা করি। তারা এই মহিলাকে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করছে। ঢাকায় তারা চ্যালেঞ্জ করছে রাজপথ দখলে নিবে। এ নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের জন্ম। আমার নেত্রীকে গালি দিবা আমরা কী চুপ করে বসে থাকতে পারি। আমাদের শক্তির উৎস হল জনগণ। আমরা জনগণকে নিয়ে চলতে চাই। 

তিনি আরও বলেন, আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ আছে। আমাদের মনে কষ্ট আছে। আমরা লিংক রোডের পাশে কলেজ করছি, হাসপাতাল হচ্ছে। পঞ্চবটী থেকে ফ্লাইওভার হচ্ছে। কে দিচ্ছে, শেখ হাসিনা। আমাদেরও তো প্রতিবাদের রাইট আছে। আমার মাকে কেউ গালি দিলে আমরা প্রতিবাদ করব না? প্রতিবাদের ভাষা সংযত রাখতে হবে। তারা বলে শামীম ওসমানের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে। আমার গায়ে লাগে না। তারা আমার গুনাহ কিনছে। কিন্তু আপনার মাকে নিয়ে বললে আপনি ছাড়বেন? 

একুশে আগস্টে একটা গ্রেনেড ট্রাকে পড়লে আজ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হত না। মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান দিলে বলত সন্ত্রাসী। এখনও অনেকে লাফায়। আমাদের ৪৯ জন মানুষ মরেছে। ধৈর্য্যের একটা সীমা আছে। লেভেল ক্রস করবেন না। আমি নেত্রীর কথা শুনি তাই নারায়ণগঞ্জ ঠান্ডা আছে। এবার কিন্তু জাতির পিতার কন্যার কথা শুনবো না। খেলেন যত খুশি। শয়তান কখনও জিতে না। কিছু ক্ষয় হবে কিছু ডালপালা ভাঙবে। কিছু শামীম ওসমানের লাশ পরবে। তারপরেও ২০২৪ সালে ইনশাআল্লাহ শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হবে। বাড়াবাড়ি করবেন না। মা বইলা গো বলার সময় পাবেন না। 

শামীম ওসমান বলেন, যে নেতা মায়ের জন্য আসে না আপনি দেশের মানুষের জন্য কী আসবেন। বলেন ডাক্তার লাগবে। তার স্ত্রী তো ভাল ডাক্তার। আসতেন শাশুড়ির সেবা করার জন্য। নাতি-নাতনিরা আসত। আমার কষ্ট লাগে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পরবর্তীতে উপযুক্ত কেউ হলে সেটা তার কাজের মেয়ে ফাতেমা। তাকে নিয়ে এসে বসান। 

তিনি বলেন, দয়া করে আপনারা জনগণকে সম্পৃক্ত করে আসবেন। পবিত্র কাবা শরীফ থেকে একবার শপথ করেছিলাম নিষিদ্ধ পল্লী পুনর্বাসনের মাধ্যমে সরাবো। শেখ হাসিনার উসিলায় আমরা সেটা সুন্দর ভাবে করতে পেরেছি। এবার যাওয়ার পরেও আরাফাতের ময়দানে ঠিক করেছি মানুষ সবচেয়ে বেশি যেটা চায় শান্তিতে থাকতে চায়। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি মুক্ত সমাজ গড়তে চাই। অক্টোবর মাসে আমরা সমাজের ভাল মানুষগুলিকে নিয়ে আগের দিনের মতো পঞ্চায়েত করব। আমি নিজে চুপচাপ গিয়ে দেখব তারা ভাল না খারাপ। একটা সমাজ আমি গড়ে তুলতে চাই। আমরা বিএনপি, জাতীয় পার্টি, চরমোনাই, হেফাজতের ভাইদেরও পাশে চাই। আওয়ামী লীগ যারা করে সবাই তো ভাল লোক না। তাদের মধ্যেও অনেক ভাল লোক আছে। 

শহরে অনেক কালো টাকা ঢুকেছে। বিএনপির মাঝারি সারির নেতাদের মেরে ফেলা হতে পারে। তাদের মেরে আমাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হতে পারে। কয়েকদিন আগে অধ্যাপক মামুনের (জেলা বিএনপির সদস্য সচিব) ওপর হামলা করা হয়েছে। একটুর জন্য বেঁচে গেছে। এই এলাকার একজন লোক যার হাতে আমাদের বহু লোক মারা গেছে। তার ছেলের নাম এসেছে। 

অনুষ্ঠানে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদলসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর