বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজের নতুন ভবনে জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় অধ্যক্ষের বাসভবনের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় নবগঠিত জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান এবং শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সাব্বিরসহ ৭ থেকে ৮জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা নবগঠিত জেলা কমিটির নেতাকর্মীদের ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ক্যাম্পাসে পৌঁছালে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
আহতদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমানের অবস্থা গুরুতর। তাকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহত মনিরুজ্জামান সাব্বিরকে বগুড়া মোহম্মাদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির পক্ষে একটি মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
ছাত্রলীগের জেলা কমিটির নেতারা ওই হামলার জন্য কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠনের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের দায়ী করেছে। তবে পদবঞ্চিত নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গত ৭ নভেম্বর বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে কাঙ্খিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ওই দিন থেকেই আন্দোলন করে আসছে। তাদের ধারাবাহিক আন্দোলনের মুখে নবগঠিত কমিটির নেতারা এখনও ছাত্রলীগের জেলা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেনি।
ছাত্রলীগের নবগঠিত বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি সজীব সাহা জানান, তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য শনিবার রাত ৯টার দিকে মোটরসাইকেলে চেপে সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবনে যান। আমি নেতাকর্মীদের বাইরে রেখে ভেতরে অধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে কথা বলার সময় আমাদের কমিটি বাতিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের সভাপতি তৌহিদুর রহমান এবং ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকে। তারা অধ্যক্ষের বাসভবনের বাইরে অপেক্ষমান আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় এবং তাদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এতে আমাদের ৭ থেকে ৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহজাহান আলী জানান, তার বাসভবনের বাইরে বহিরাগতরা এসে গোলমাল করেছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। তিনি বলেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমি পুলিশকে খবর দিই।
জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলরত ছাত্রলীগনেতা মাহফুজার রহমান জানান, আমরা বিএনপি জামায়াতের নাশকতা এবং ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের ক্যম্পাস দখল করার খবরে কলেজে গেলে নবগঠিত ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারন সম্পাদককের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করলে আমার তা প্রতিহত করি। হামলাকারীদের হাতে নানা ধরনের অস্ত্র ছিলো। আমরা ক’দিন আগে ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও শিবিরকে ধাওয়া করেছিলাম। শনিবার রাতে আমরা খবর পাই যে ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাওয়া ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীরা প্রতিশোধ নিতে ক্যাম্পাসে এসেছে। তখন আমরা তাদের প্রতিহত করতে গেলে আমাদের ওপর ২ রাউন্ড গুলি চালানো হয়।
বগুড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ) আবদুর রশিদ জানান, খবর পেয়ে সাথে সাথে কলেজে পুলিশ পাঠানো হয়। তার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে অন্য নেতাকর্মীদেরকে কলেজ থেকে বের করে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে হামলা নিয়ে কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ