রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার কুতুবখালী কাঁচামালের আড়তে আল আমিন ও উজ্জল গ্রুপের চাঁদাবাজির দাপট দীর্ঘদিন ধরেই। চাঁদা আদায়ে তাদের রয়েছে ১০০ থেকে ১২০ জনের লাঠিয়াল বাহিনী। চাঁদা দিতে কেউ অস্বীকার করলে তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে ওই বাহিনীর একটি গ্রুপের সদস্যরা কাঁচামালের আড়তে প্রবেশ করে। তারা কুলি-মজুরের কাছ থেকে সিটি টোল আদায় করতে চাইলে আরেকটি গ্রুপের সদস্যরা বাধা দেয়। পরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পিকআপ শ্রমিক ইমরান (২৬) নিহত হন। এ ঘটনায় মো. সিদ্দিকুর রহমান (২৫) ও শাহাদাত (২০) নামে দুই শ্রমিক গুরুতর আহত হন। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সিটি টোল আদায় করাকে কেন্দ্র করে হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহত ইমরান ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। স্থানীয়, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
জানা গেছে, ইমরান, সিদ্দিক ও শাহাদাত লাইনম্যান হিসেবে কাজ করতেন। লাইনম্যানের কাজ হলো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা ও বিভিন্ন টোলের টাকা তোলা। সেখানে ডিউটিতে থাকা অবস্থায় হামলার শিকার হন তারা। এতে তিনজনই ছুরিকাঘাতে আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে রাত পৌনে ১২টার দিকে ইমরানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুইজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। পরে পুলিশের অনুরোধে শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, যাত্রাবাড়ী কুতুবখালী কাঁচামালের আড়তের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উজ্জল ও আল আমিন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনজন আঘাতপ্রাপ্ত হন। এদের মধ্যে ইমরান নিহত হন। নিহত ও আহত সবাই পরিবহন শ্রমিক। চাঁদাবাজ উজ্জল ৫০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ মো. মাসুম মোল্লার ভাগ্নি জামাই।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুল আলম জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সিটি টোল আদায়কে কেন্দ্র করে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী কাঁচামালের আড়তে দুই পক্ষের মারামারি হয়। এতে পিকআপ শ্রমিক ইমরান মারা যান। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
ডিএমপির ডেমরা জোনের এসি মধুসূদন দাস বলেন, দুই পক্ষের চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে খুনের এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ