নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ করে হত্যা শেষে প্রত্যেকটি লাশের পেট কেটে দেওয়া হয়েছিল যেন লাশ ভেসে না ওঠে। কিন্তু লাশের পেট কেটে দেওয়ার কারণেই শীতলক্ষ্যার বুকে ভেসে উঠেছিল সাতজনের লাশ। নদীতে লাশ ডুবিয়ে দেওয়ার আগে পেট কাটার এই কাজটির দায়িত্ব নিয়েছিলেন দুজন। বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি সূত্র জানায়, লাশের পেট কেটেছিলেন সাত খুনের ঘটনায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেওয়া র্যাব কর্মকর্তা মেজর আরিফ হোসেন ও লেন্স নায়েক লে. করপোরাল হীরা মিয়া। পেট কাটার কাজে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে নিঁখুতভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে পারেনি তারা। যে কারণে ইট, বস্তা ও কমান্ড গিঁটসহ নানা কৌশলকে ব্যর্থ করে দিয়ে একে একে ভেসে উঠেছিল সাতজনের লাশ। এ রকম তথ্য-প্রমাণ মিলেছে খোদ সাত খুনের ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও। সূত্র জানায়, নদীতে লাশ ডুবিয়ে দেওয়ার সময় লাশের পেট কাটার নৃশংস কাজটি করেছিলেন মেজর আরিফ ও লেন্স নায়েক লে. করপোরাল হীরা মিয়া। তারা দুজনেই হত্যার দায় স্বীকার করে ইতিমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। লাশের এই পেট কাটতে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয় দুবার। প্রথমে সাতজনকে অপহরণ শেষে হত্যার পর লাশের সঙ্গে ইট, বস্তা ও কমান্ড গিঁট দিয়ে আনা হয় কাঁচপুর সেতুর নিচে। সেখানে লাশের পেট কাটার কথা উঠলে মেজর আরিফ বলেন যে, এখানে কাটলে রক্ত নানা স্থানে লেগে থাকবে। এ ছাড়া পেটের ভুঁড়ি ফেটে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। পরে সিদ্ধান্ত হয় যে লাশ নদীতে ডুবিয়ে দেওয়ার আগেই পেট কাটার কাজটি সম্পন্ন করা হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত দুটি নৌকা দিয়ে সাতজনের লাশ নেওয়া হয় বন্দর শীতলক্ষ্যা নদীর চর ধলেশ্বরী এলাকায়। লাশ নদীতে ডুবিয়ে দেওয়ার সময় মেজর আরিফ লাশের পেট কাটতে শুরু করেন। এ সময় তিনি একটি চাকু নিয়ে খুব দ্রুত লাশের পেট কাটতে থাকেন। পাশে থাকা লেন্স নায়েক হীরা মিয়াকে নির্দেশ দেওয়া হয় লাশের পেট কাটতে। তিনি নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে থাকেন। পেট কাটার কাজে ব্যবহৃত সেই চাকু নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
সূত্রটি জানায়, সাতজনকে অপহরণের পর সারা দেশে যে তোলপাড় সৃষ্টি হয় তাতে সাতজনকে হত্যার পর লাশ গুম নিয়ে তিন র্যাব কর্মকর্তার তাড়াহুড়ো ছিল প্রচুর। তাড়াহুড়োর কারণেই লাশের পেট কাটা ঠিকমতো হয়নি। লাশ কত দ্রুত নদীতে ডুবানো যায় সেই দিকেই লক্ষ্য ছিল তাদের।
খোদ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে দেখা যায়, পেট কাটার কারণেই সাতজনের লাশ ডুবিয়ে দেওয়ার পরেও ভেসে উঠেছিল। ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন দুলাল চন্দ্র জানিয়েছিলেন, লাশের প্রত্যেকের পেট কেটে দেওয়া হয় যাতে লাশ ভেসে না ওঠে। কিন্তু এই কেটে দেওয়ার কারণেই লাশ ভেসে ওঠে। পেটের ভিতরের নাড়িগুলো এই কেটে দেওয়া অংশে এসে প্যাঁচ খেয়ে যাওয়ায় জৈবিক কারণে তৈরি হওয়া গ্যাস পেট ফুলিয়ে তোলে। ফলে লাশগুলো ৩০-৪৫ কেজি ওজনের ইট নিয়েও ভেসে ওঠে। প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল নাসিক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ শেষে হত্যার পর লাশ নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। ৩০ এপ্রিল একে একে সাতজনের লাশ ভেসে ওঠে। পরে এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন র্যাব-১১-এর সাবেক সিও তারেক মোহাম্মদ সাঈদ, মেজর আরিফ হোসেন ও কোম্পানি কমান্ডার এম এম রানাসহ আরও চার র্যাব সদস্য।
শিরোনাম
- ইসির ৯ কর্মকর্তাকে বদলি-পদায়ন
- জাতির গর্বিত প্রতিষ্ঠান সশস্ত্র বাহিনী: তারেক রহমান
- জাতিসংঘের কপ-৩০ জলবায়ু সম্মেলন ভেন্যুতে ভয়াবহ আগুন
- দেশের বাজারে কমলো স্বর্ণের দাম
- তরুণরাই গড়বে সুন্দর বাংলাদেশ: ইসরাফিল খসরু
- রুশ গোয়েন্দা জাহাজ থেকে লেজার নিক্ষেপ, যুক্তরাজ্যের কড়া হুঁশিয়ারি
- নেত্রকোনায় ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার আটক, ৭ দিনের কারাদণ্ড
- ফটিকছড়ি প্রেস ক্লাবের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন
- সীমান্তে কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি
- তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে নারীর নিরাপত্তা উন্নত হবে: শামা ওবায়েদ
- গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কাতারের নিন্দা
- ভারতীয় বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আবারও বাড়ালো পাকিস্তান
- আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের অভিযান, নিহত ৩০
- ঢাকার যে আসনের প্রার্থী হতে মনোনয়ন কিনলেন রিকশাচালক সুজন
- রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মিলে তৈরি করছে শান্তিচুক্তির খসড়া, বিপাকে ইউক্রেন
- চবিতে চীনের অর্থায়নে কনফুসিয়াস সেন্টার স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
- বেগম রোকেয়ার সুলতানা’স ড্রিমের বাংলা নাট্যরূপ মঞ্চস্থ করল আইইউবি থিয়েটার
- ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৩২ শতাংশই ৫-২৯ বছর বয়সী’
- টঙ্গীতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
- চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ ছাত্র নিহত
নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন
পেট কাটা হয়েছিল যাতে লাশ ভেসে না ওঠে
রোমান চৌধুরী সুমন, নারায়ণগঞ্জ
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর