‘আমরা দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত পুলিশ গড়তে চাই। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ৬৬০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মাদক ও দুর্নীতি বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো পুলিশ সদস্য মাদকাসক্ত সন্দেহ হলে তার ডোপ টেস্ট করানো হবে।’ গতকাল পুলিশ সদর দফতরে থেকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পুলিশের সব ইউনিটপ্রধানের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা-সংক্রান্ত জুম মিটিংয়ে এসব নির্দেশনা দেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। করোনা থেকে সুরক্ষার পাশাপাশি জনগণের ঈদ উদ্্যাপনকে নির্বিঘ্ন করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন আইজিপি। তিনি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদকে কেন্দ্র করে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রসহ পার্ক এবং ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে জনসমাগম না করার জন্য জনগণের প্রতি অনুরোধ জানান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদ্্যাপন করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান আইজিপি।
পুলিশপ্রধান বলেন, সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে পশুর হাটে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে। সম্ভব হলে ইজারাদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে পশুর হাটের প্রবেশপথে জীবাণুরোধী চেম্বার স্থাপন করা যায়। পশুর হাটে জাল নোট বন্ধে পুলিশি তৎপরতা বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করতে না পারেন, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি ও অরাজকতা বরদাস্ত করা হবে না। চামড়া পাচার রোধেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো পরিবহন অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে পারবে না। লঞ্চসহ সব ধরনের জলযান অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া থেকে বিরত থাকবে। সড়ক-মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ মসজিদে ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন আইজিপি।
আইজিপি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে যেন কোনো গোষ্ঠী বা মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো ধরনের গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য গোয়েন্দা নজরদারি ও মনিটরিং বাড়াতে হবে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা সম্পর্কে সদা সতর্ক ও তৎপর থাকতে হবে। নিয়মিত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে হবে, নজরদারি বাড়াতে হবে।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘আমরা পুলিশে করোনা সংক্রমণের হার শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। কভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধ বিষয়ক হ্যান্ডবুক প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে দিয়েছি। সুরক্ষাসামগ্রী দিয়েছি। করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ফোর্সের কীভাবে কল্যাণ হবে তা নিশ্চিতের এবং দায়িত্ব বণ্টনের পরামর্শ দেন তিনি।