বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
সংসদে তোফায়েল

বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে দেশ স্বাধীন হতো না

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম লীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, পৃথিবীতে অনেক নেতা আছেন, অনেক মানুষ আছেন, যাদের মৃত্যু হয় না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মৃত্যুবরণ করেননি, তিনি আছেন এবং তিনি চিরদিন থাকবেন। তিনি বলেন, ১৯৬৯ সালে যেদিন আমরা বঙ্গবন্ধুকে গণসংবর্ধনা দিয়েছিলাম সেদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে তোমরা আমাকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছ, যদি কোনো দিন পারি নিজের রক্ত দিয়ে সেই রক্তের ঋণ শোধ করে দিয়ে যাব। তিনি একাই রক্ত দেননি, সপরিবারে রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতির রক্তের ঋণ শোধ করে গেছেন। জন্মশতবার্ষিকীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আপনার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা- এই জাতি কোনো দিন আপনাকে ভুলবে না।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন। অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সরকারি দলের আবুল কালাম আজাদ, শাহাজান খান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, মীর্জা আজম ও নূরুল ইসলাম নাহিদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির সদস্য মো. ফখরুল ইমাম প্রমুখ। আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, ৬ দফা নিয়ে অনেকের কাছে গিয়েছি, কেউ আমার ৬ দফা সমর্থন করেনি। তারপর কবিগুরু কবিতা দিয়ে শুরু করেন, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলরে, একলা চলরে’, এইটা বলে তিনি বক্তৃতা শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ কর্মীর দল, আওয়ামী লীগ কোনো নেতার দল না। আমরা কর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি এক দিন আমার ৬ দফা নিয়ে আমি যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে ৬ দফা দিয়েছি তা বাস্তবায়ন করব। কেউ আমার চলার পথ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তিনি ৬ দফা দিয়ে ৩৫ দিনে ৩২টি জনসভা করেছিলেন এবং আটবার গ্রেফতার হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, কারাগারে থেকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ওরা আমাদের ফাঁসি দিতে পারবে না, আমাদের বিচার শুরু হবে বাংলার মানুষ গর্জে উঠবে, জেগে ?উঠবে, এক দিন আমাকে মুক্তি দিবে। এই দেশে একটি নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে আমি বিজয়ী হব, ওরা আমাদের ক্ষমতা দেবে না। সেদিনই পাকিস্তানের কবর রচিত হবে।’ জেলের মধ্যে একজন মানুষ বন্দী, কীভাবে কথাগুলো বলে গেলেন বলে আবেগাপ্লুত হন তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এমন একজন নেতা যিনি তার যৌবন কাটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। সেই মহাননেতাকে কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞ চিত্তে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু বহুবার বলেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আমি এসেছি বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলা ভাষার প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে মমত্ববোধ সেটা তার অনেক বক্তৃতায় বোঝা গেছে। এই পৃথিবীতে অনেক নেতা আসবে, কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা আসবে না। তিনি ছোটকে বড় করতেন। ইউনিয়নের নেতাকে থানার নেতা, থানার নেতাকে জেলার নেতা, জেলার নেতাকে জাতীয় নেতা করেছেন। আমাদের জাতীয় চার নেতা জেলার নেতা ছিলেন, তাদের জাতীয় নেতা করে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা হয়েছিলেন। সমুদ্রের গভীরতা নিরূপণ করতে পারবেন, মাপতে পারবেন কিন্তু বাংলার মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসার গভীরতা আপনি মাপতে পারবেন না।

সর্বশেষ খবর