বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
নির্বাচনী সহিংসতার বলি

নাস্তা করতে গিয়ে প্রাণ গেল আলোর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

নাস্তা করতে গিয়ে প্রাণ গেল আলোর

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় নগরীর আকবর আলী এলাকায় অ্যাকশনে যায় পুলিশ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

অন্য দিনগুলোর মতোই স্বাভাবিকভাবে গতকালের সকাল শুরু হয় দিনমজুর মো. আলাউদ্দিন আলোর। চসিক নির্বাচন হওয়ায় একটু দেরি করেই ঘুম থেকে উঠে বাসার পাশে দোকানে নাস্তা করতে যান। এ সময় ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ মনোনীত এবং বিদ্রোহী দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন নিরীহ আলো। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। সকালে নগরীর ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইউসেপ স্কুল কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলো কুমিল্লা জেলার বুড়িচংয়ের সুলতান আহমদের ছেলে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) উত্তর জোনের উপকমিশনার বিজয় বসাক বলেন, ‘আলো খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনার পেছনে যারাই জড়িত থাকুন, পার পাওয়ার সুযোগ নেই।’ নিহত আলাউদ্দিন আলোর বোন জাহানারা বেগম বলেন, ‘আমার ভাই কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না।

রাজমিস্ত্রি হিসেবে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করত। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাশতা করতে দোকানে যায়। এ সময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় আলো। আমরা এ খুনের সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসি চাই।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমবাগান এলাকার মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী কিছু যুবক গুলি ছুড়তে ছুড়তে আমবাগান এলাকার ইউসেপ স্কুল কেন্দ্র দখল করতে আসে। এ সময় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মাহমুদুর রহমানের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তারা। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন নিরীহ যুবক আলো। ঘটনার সময় র‌্যাব, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার লোকজন উপস্থিত থাকলেও কেউ সংঘাত থামাতে চেষ্টা করেননি। উল্টো তারা অস্ত্রধারীদের সাহায্য করেছেন।’

আমবাগান এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত থেকেই আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের জড়ো করেন। রাতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাহমুদুর রহমানের অনুসারী কর্মী-সমর্থকদের বাসায় হামলা চালায় সেই সন্ত্রাসীরা। গতকাল সকাল থেকে কেন্দ্রে আসা ভোটারদের ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর সাঙ্গপাঙ্গরা বাধা দেয় এবং মারধর করতে থাকে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে তারা অস্ত্রের মহড়া দেয়। আলো নিহত হওয়ার পর পরই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল করে একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর