শনিবার, ১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
মৃত্যু নিয়ে রহস্য

কাফনে মোড়ানো শিশুকে নেওয়া হলো মর্গে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বাগমারার সাত বছর বয়সী শিশু মারুফ মারা যাওয়ায় দাফনের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। জানাজার জন্য লোকজনও এসেছিলেন; কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানাজা হয়নি। পুলিশ কাফনের কাপড়ে মোড়ানো শিশু মারুফ হাসানের (৭) মরদেহ গতকাল দুপুর দেড়টায় উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর বাবা, সৎমা, দুই চাচাকে থানায় নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে। শিশু মারুফ হাসান উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের শাহজাহান আলীর দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে। শিশুর মায়ের অভিযোগ, বাবা ও সৎমা তার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাবি, শিশুটিকে জিনে মেরে ফেলেছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, গতকাল সকালে শিশু মারুফকে বাড়িতে সৎমায়ের কাছে রেখে শাহজাহান কাজের জন্য বাইরে যান। শিশুটি অস্বাভাবিক আচরণ করছে বলে সৎমা মুক্তা মোবাইল ফোনে তার স্বামীকে জানান। স্বামীর পরামর্শে স্থানীয় কবিরাজের কাছ থেকে ঝাড়ফুঁক দেওয়া পানি শিশুর নাকে-মুখে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এতে কোনো উন্নতি হয়নি। এক পর্যায়ে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে। এ সময় চাচা ও প্রতিবেশীরা এসে শিশুর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শিশুটি মারা যায়।

স্থানীয় লোকজন বলেন, শাহজাহানের তিন স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মারুফা বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের প্রথম সন্তান মারুফের জন্ম হয়। দুই বছর আগে মারুফার সঙ্গে শাহজাহানের ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর মারুফ তার বাবার কাছে থাকত। এক বছর আগে শাহজাহান মুক্তা (২২) নামে এক নারীকে তৃতীয় বিয়ে করেন। শাহজাহান আলী, মুক্তা ও কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, মারুফ প্রায়ই অস্বাভাবিক আচরণ করত। মাঝেমধ্যে অচেতন হয়ে যেত। তাকে জিনে ধরেছে বলে এত দিন ঝাড়ফুঁক দেওয়া হতো। তাদের ধারণা, জিনেই তাকে মেরে ফেলেছে। শিশুকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।

বাগমারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। এখনো মামলা হয়নি। তবে শিশুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর