সোমবার, ৩১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

‘ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধান বাধা প্রশাসন’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারী ও সংখ্যালঘুদের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনের মনোভঙ্গিই এখন আইন বাস্তবায়নের প্রধান বাধা বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনরা। গতকাল এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘নারী এবং সংখ্যালঘুদের ভূমি অধিকার ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে অংশ নেওয়া বক্তারা এ কথা বলেছেন উল্লেখ করে গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সংগঠনটি। এই সংলাপের সহ-আয়োজক বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি। তিনি বলেন- প্রধানমন্ত্রী কৃষিবান্ধব একজন মানুষ। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তিন ফসলা জমি কোনোভাবেই কাউকে দিচ্ছি না। ইসলামী বিধান অনুযায়ী নারীর উত্তরাধিকার নির্দিষ্ট আছে। হিন্দু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা সম্মিলিতভাবে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।

এ ছাড়া তিনি বলেন, ভূমিবিষয়ক মামলা, সহিংসতা, ও জটিলতা দূরীকরণে সরকার ভূমি দখলিস্বত্ব আইন সংশোধনের কাজ করছে এবং আগামী জুলাই মাস থেকে অনলাইনে ভূমির খাজনা পরিশোধ কার্যক্রমের উদ্বোধন হবে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি খাসজমি উদ্ধার ও ভূমিহীনদের মাঝে তা বিতরণের বিষয়টি মনিটরিং করছে। ভূমিবিষয়ক তথ্যভান্ডারও খোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

ওই সংলাপে নারী, আদিবাসী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠায় মূলত আইনি এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা তুলে ধরে মূল প্রবন্ধে বলা হয়- নারী এবং কৃষকদের শ্রমে দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণ হলেও তাদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে পারছে না সরকার। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব নারীর ভূমি তথা উত্তরাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড তৈরির দাবি তোলা হলেও এ বিষয়ে সরকারের আগ্রহ দৃশ্যমান নয়। এ ছাড়া প্রান্তিক আদিবাসী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি আইন ও নীতিমালার সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়াকে দায়ী করেছেন। পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীদের ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে ভূমি কমিশন গঠিত হলেও প্রয়োজনীয় লোকবল ও অর্থের অভাবে এবং বিধিমালা না হওয়ার কারণে কমিশন কাজ করতে পারছে না।

প্রধানমন্ত্রীর সদয় আগ্রহের কারণে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনটি পাঁচবার সংশোধন করা হয়। এ ছাড়া আদালতের রায় পাওয়ার পরও প্রশাসনের ইতিবাচক মানসিকতার অভাবে ভুক্তভোগীরা তাদের জমির মালিকানা ফেরত পাচ্ছে না। ‘খ’ তফসিল বাতিল হওয়ার পরও ভূমি প্রশাসন থেকে নামজারি হচ্ছে না। এ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের ৮ দফা নির্দেশনাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অর্পিত সম্পত্তিবিষয়ক অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য একটি মনিটরিং সেল খোলার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। সরকার যেহেতু এসডিজি পূরণে আন্তরিক, তাই এর মূলমন্ত্র অনুযায়ী পিছিয়ে থাকা সব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে কার্যকর আইন প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর