অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী বাজেট হবে সাধারণ মানুষের মঙ্গলের বাজেট। বাজেটে দেশের অর্থনীতিকে চাঙা রাখতে যা যা প্রয়োজন সেসব উদ্যোগ নেওয়া হবে। আগামী ৯ জুন বৃহস্পতিবার ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। গতকাল সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় আমদানিতে নিরুৎসাহিত করা হবে কি না- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রপ্তানির পাশাপাশি আমদানিও বাড়ছে। এটা বন্ধ করা যাবে না। তবে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই। মেশিনারিজ, শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামাল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এগুলোর আমদানি অব্যাহত থাকবে। তবে অপ্রয়োজনীয় এবং বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি হতে পারে। তিনি বলেন, বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলমান।
এখনো কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। রাজস্ব আদায় এবং বাজেট বাস্তবায়নে সম্পদ আহরণ কীভাবে হবে তা নিয়ে অর্থ বিভাগ, এনবিআরসহ সরকারি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে ইতোমধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আরও সভা হবে সেখানে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনার করে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সব জিনিসের দাম সারা বিশ্বে বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাংকের মার্চ মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক বছরে বিশ্বে গমের দাম বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। গরুর মাংসের ৩৫ শতাংশ, মুরগির মাংসের ৫৫ শতাংশ, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ, চিনি ১১ শতাংশ, চা ১৩ শতাংশ, টিএসপি সার ৬৫ শতাংশ এবং ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে ২৩৪ শতাংশ। আমাদের এগুলো উচ্চ দামে কিনতে হয়।
ডিজিটাল কানেকটিভিটি প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ প্রজেক্টটি আমাদের বিবেচনায় ভালো প্রকল্প। সেখানে অনেক জনবল কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। গণমাধ্যমে এসেছে, করোনার মধ্যে দেশে ১ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছে ই-কমার্সে। একই খাতে চলতি বছরে আরও ৫ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে। আমরা যে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দিই সেক্ষেত্রে দুটি জিনিস বিবেচনা করি। মৌলিক দুটি এলাকা বিবেচনা করি, রেভিনিউ জেনারেশন ফর গভর্নমেন্ট এবং কর্মসংস্থান। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। বাজেটের আকার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বছর আমরা সবকিছু জানিয়ে করেছি। জনগণ যাতে আরও জানতে পারে সেরকম তথ্যাদি বিবেচনায় রেখেই বাজেট সাজিয়েছি।
করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা আছে, আসছে বাজেটে এটা বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের আইটেম ওয়াইজ আলোচনা আরও করতে হবে। এনবিআর আছে, তাদের সঙ্গে বসতে হবে। নিজস্ব মন্ত্রণালয়ের বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা বাজেট তৈরি করব। আরও কিছুদিন সময় লাগবে। আমাদের দেশের জনগণের যাতে করে ভোগান্তি না বাড়ে সেজন্য আমরা কাজ করছি। সেগুলো কম-বেশি আমরা অবশ্যই বিবেচনায় নেব।