বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

২৫ কোটি টাকার খাল এখন ময়লার ভাগাড়

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

২৫ কোটি টাকার খাল এখন ময়লার ভাগাড়

রাজশাহীর কাটাখালী বাজার থেকে শ্যামপুরের দিকে নামতে রাস্তার ডান পাশ দিয়ে চোখে পড়বে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। এক বছর আগেই এটি খাল হিসেবে ধরে খনন বাবদ ২৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। কিন্তু কাজে আসেনি ২৫ কোটি টাকার প্রকল্প। বছর না ঘুরতেই খালগুলো আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। জলাবদ্ধতা দূর করতে ও বর্ষার পানি জমা রেখে সেচ কাজে ব্যবহার উপযোগী করতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) রাজশাহীর চার উপজেলায় খাল খনন করে। তিন অর্থবছরে রাজশাহীর চার উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। গত বছরের জুনে প্রকল্পটি শেষ হয়েছে। প্রকল্পের দরপত্র অনুযায়ী খালগুলো তিন থেকে নয় ফুট খনন হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নেওয়া এই প্রকল্পটির কারণে অনেকে বসতি হারাতে বসেছেন। বিএমডিএ সূত্র জানায়, জলাবদ্ধতা দূর করতে ও নদীর পানি সেচের কাজে লাগাতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজশাহীর চার উপজেলায় খাল খননে প্রকল্প নেয়। প্রকল্পগুলোর মধ্যে আছে- বাঘা উপজেলার মুর্শেদপুর-নওটিকা খাল ৫.৭০ কিলোমিটার, চাঁদপুর-ব্যাংগাড়ী খাল ১.১১ কিলোমিটার, পুঠিয়া উপজেলার চ্যাংড়ার বিল খাল ১.৩০ কিলোমিটার, চারঘাট উপজেলার মেরামতপুর-পিরোজপুর ২.১০ কিলোমিটার ও চারঘাট-পবা ও পুঠিয়া উপজেলার মাঝ দিয়ে যাওয়া শাহাপুর-কাটাখালী-ছত্রগাছা ১৪.৯২ কিলোমিটার খাল খনন। গত বছরই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে শাহাপুর-কাটাখালী-ছত্রগাছা ১৪.৯২ কিলোমিটার খালটি এখন ময়লা-আবর্জনার ভাড়াড়ে পরিণত হয়েছে। পাশে বসবাস করা মানুষ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। অনেকের বাড়ি ভেঙে গেছে। কাটাখালী মোল্লাপাড়ার আফাজ উদ্দিন জানান, অপরিকল্পিতভাবে খাল খনন করায় অনেকের বাড়িঘর ভেঙে গেছে। অনেকে ঝুঁকির মধ্যে আছেন। জলাবদ্ধতা দূর হয়নি। উল্টো মানুষ বসতি হারিয়েছে। আগের মতো ভরাট হয়ে গেছে খালটি। মোকসেদ নামের আরেকজন জানান, পদ্মা নদীতে পানি যাতে সহজে চলাচল করতে পারে, সে জন্য খালটি খনন করা হয়েছিল।

কিন্তু পানি নামেও না আবার পদ্মা থেকে খালে পানি আসেও না। এখন মানুষ দৈনন্দিন কাজের বর্জ্য ফেলছেন ওই খালে।

প্রকল্প পরিচালক নাজিরুল ইসলামের দাবি, ঠিকাদার প্রথমে কাজটি ভালোভাবে করেনি। তাগাড়া দেওয়ার পর সঠিকভাবে কাজ করেছে। বিএমডিএর চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান বলেন, ‘কৃষক ও জনগণের স্বার্থ দেখার জন্য বিএমডিএ। জনস্বার্থে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেটি নেওয়া হবে। খালটি সঠিকভাবে খনন করা হয়েছে কি না- তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর