রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলায় আরও দুজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। এ নিয়ে গত দুই দিনে এ মামলায় তিনজন সাক্ষ্য দিলেন। সোমবার এ মামলার বাদী ও ১ নম্বর সাক্ষী নিহত মুহিব্বুল্লাহর ছোটভাই হাবিবুল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। গতকাল দুই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম। সাক্ষীরা হলেন হামিদ মাঝি ও নূরে আলম। তারা দুজনই মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী বলে জানিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী আরও জানান, আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে ১৪ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তাদের উপস্থিতিতে গ্রহণ করা হয় সাক্ষ্য। সোমবার সাক্ষ্যদানকালে মামলার বাদী হাবিবুল্লাহ আদালতে জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে বাস্ত্যুচুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জোরালো ভূমিকা পালন করায় সন্ত্রাসীদের এক গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে তাঁর ভাইকে হত্যা করেছে। রোহিঙ্গারা যাতে দ্রুত তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে এজন্য তিনি ক্যাম্পে ক্যাম্পে আন্দোলন শুরু করেন।
রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও নানা দাবি তুলেছিলেন তিনি।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ১-ইস্ট নম্বর ক্যাম্পের ডি ব্লকে নিজ সংগঠনের কার্যালয়ে মুখোশধারী বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন। পরদিন হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ সাড়ে আট মাস তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উখিয়া থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দীন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এতে সাতজনের নাম-ঠিকানা সঠিক পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে ৩৮ জনের নাম-ঠিকানা সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে। আদালত শুনানি শেষে ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন। ওইদিন আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১১ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।বর্তমানে মুহিব্বুল্লাহ পরিবারের ২৫ সদস্য কানাডায় বসবাস করছেন। প্রথম দফায় ৩১ মার্চ স্ত্রীসহ ১১ এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কানাডা পাড়ি জমান জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার সহায়তায়।