দিনাজপুরের দুই উপজেলার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে নলশীষা নদীর দুই পাড়ের কয়েক গ্রামের মানুষ। বাঁশের সাঁকো দিয়ে দিনের পর দিন ঝুঁকিতে চলাচলের পাশাপাশি আশপাশের গ্রামের উৎপাদিত পণ্য মাথায় নিয়ে পারাপার হতে হয়। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও সেতুটি আজও নির্মাণ হয়নি। বর্ষার সময় বাঁশের সাঁকো নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। তখন পণ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ২০ মাইল ঘুরে নবাবগঞ্জ হয়ে বিরামপুর যেতে হয়।
তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রস্তাবনা পাঠানো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিগগিরই ডিপিপিতে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন ও নবাবগঞ্জ উপজেলার গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে গেছে নলশীষা নদী। দুই উপজেলার সংযোগস্থল নদীর লালঘাট নামক স্থানে নেই কোনো সেতু। তাই নিজেদের প্রয়োজনে শত শত ভুক্তভোগী মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পার হচ্ছে। এতে পণ্য পরিবহনে হচ্ছে ভোগান্তি। নবাবগঞ্জের গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের মহিষবাতান, রঘুনাথপুর, লাইকারচড়া, পাদমপুর, হরিপুর, বস্তাপাড়া, মন্ডলচাঁদ গ্রাম এবং বিরামপুরের খানপুর ইউপির সোনাঝুড়ি, দীঘলচাঁদ, ঘোড়াপাথর, নটকুমারী, করমতলী ও রতনপুর গ্রাম। নদীটির দুই পাশে ১৩ গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাস। তারা লালঘাটে প্রায় ৬০ মিটার দীর্ঘ বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি বাঁশের সাঁকো বানিয়েছেন।
স্থানীয় রবীন সরেনসহ এলাকাবাসী জানান, ভ্যানে ধান ও আলু নিয়ে যাওয়ার সময় সাঁকো ভেঙে পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এ পথ দিয়ে রতনপুর হয়ে বিরামপুর এবং ফুলবাড়ী থেকে পণ্য আনতে যান তিনি। তবে বর্ষায় হয় বিপত্তি। পুরো সাঁকো ডুবে যায় পানিতে। তখন প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘুরে নবাবগঞ্জ হয়ে বিরামপুর যেতে হয়। ভ্যানচালক ছদরুল বলেন, বর্ষাকালে এই সাঁকো অচল থাকে। তাই তখন আয় অনেক কমে যায়।
স্থানীয় কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, সেতু না থাকায় উৎপাদিত ফসল মাথায় করে পরিবহন করতে হয়। এতে ভোগান্তি আর খরচ দুটোই বাড়ে। স্থানীয় শিক্ষার্থীরা জানায়, বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেতে ভয় লাগে। বর্ষাকালে সাঁকোটি পানিতে ডুবে যায় তখন স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। খানপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ফ্লাবিয়াস হেমব্রন জানান, বর্ষাকালে এই সাঁকো অচল থাকে। ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। তখন পণ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ২০ মাইল ঘুরে যেতে হয়।