বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠন। তারা সামর্থ্য অনুযায়ী খাদ্যসামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য নিয়ে বানভাসি মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে।
জমিয়ত : ত্রাণকার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। দলের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, কুমিল্লার আশরায় অবস্থিত অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে দলের একাধিক টিমের মাধ্যমে এসব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুর জেলার আক্রান্ত বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে দলীয় নেতৃবৃন্দ ধর্মবর্ণনির্বিশেষে সব পানিবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাড়িয়ে দিয়েছেন সহায়তার হাত। চিড়া, মুড়ি, গুড়, বিস্কুট, বিশুদ্ধ পানি, চাল, ডাল, তেল, পিঁয়াজ, খাবার স্যালাইন, জরুরি ওষুধ, গামছা ইত্যাদির পাশাপাশি কোথাও কোথাও রান্না করা খাবারও বিতরণ করা হয়।
আশেকানে মাইজভান্ডারী অ্যাসোসিয়েশন : অরাজনৈতিক সংগঠন আশেকানে মাইজভান্ডারী অ্যাসোসিয়েশনের পৃষ্ঠপোষক মাওলানা ছৈয়দ মুজিবুল বশর আল হাচানী আল মাইজভান্ডারীর পক্ষ থেকে দেশের বন্যাদুর্গত প্রত্যন্ত অঞ্চলের বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। রবিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরসহ কুমিল্লা টাউন হল মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মাধ্যমে বিতরণের জন্য ত্রাণ হস্তান্তরসহ বুড়িচং উপজেলার সাধকপুর, জগৎপুর ও আশপাশ এলাকার বন্যাদুর্গতদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও প্রয়োজনীয় ওষুধসংবলিত প্যাকেট বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আশেকানে মাইজভান্ডারী অ্যাসোসিয়েশনের ঢাকা, কুমিল্লা ও বুড়িচং উপজেলার কর্মকর্তা ও সদস্যরা।
দাওয়াতে ইসলামী : সংগঠনের যোগাযোগ বিভাগের জিম্মাদার মুফতি জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী জানান, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারীসহ বন্যাকবলিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সুফিবাদী অরাজনৈতিক সংগঠন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। বন্যার পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বন্যাকবলিত এলাকায় সংগঠনটির মানবকল্যাণ বিভাগ (এফজিআরএফ)-এর সহযোগিতায় প্রায় ২০টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বানভাসিদের উদ্ধার, মারা গেলে দাফন-কাফনের ব্যবস্থা ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত দাওয়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রায় ৫০ হাজার পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। বন্যাকবলিত দুর্গম এলাকায় গিয়ে পানি, শুকনা ও রান্না করা খাবারও বিতরণ করছে তারা।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : ফেনীতে ক্যাম্প স্থাপন করে দীর্ঘমেয়াদি ত্রাণকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথ সমন্বয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহপ্রশিক্ষণ সম্পাদক ও যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ ও বায়তুলমাল বিভাগের সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম ও যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিভাগের সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার ফেনী শহরের আলিম উদ্দিন রোডে সালাহউদ্দিন চত্বর সংলগ্ন রাবেয়া লতিফ মার্কেটে ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। কার্যক্রম শুরু হয় ‘দস্তরখানা’ প্রতিষ্ঠা করে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণের মাধ্যমে। এর পর থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় ফুড প্যাকেজ, শিশুখাদ্য, প্রাথমিক ওষুধ, বিশুদ্ধ পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণ করা হয়। ক্যাম্পে দায়িত্বরত সংগঠনের সহবায়তুলমাল সম্পাদক ও যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিভাগের সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পিং করে কাজ করে যাচ্ছি। ফেনীতে এসেই আমরা এলাকা পরিদর্শন করে নির্ধারণ করেছি বন্যার্ত মানুষের সবচেয়ে জরুরি কোন জিনিস। এলাকা পরিদর্শন করে আমরা অনুধাবন করি, পানিতে বাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ চুলা জ্বালাতে পারছে না। এজন্য ফেনী শহরের সালাহউদ্দিন চত্বর সংলগ্ন রাবেয়া লতিফ মার্কেটে ক্যাম্প স্থাপন করে ‘দস্তরখানা’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।