৫ আগস্টের পর দেশে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও সিলেটে বন্ধ হয়নি বহুল আলোচিত ভারতীয় চিনির অবৈধ ব্যবসা, যা সিলেটসহ সারা দেশে পরিচিতি পেয়েছে ‘বুঙ্গার চিনি’র কারবার বলে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে অবৈধ এই ব্যবসার শেল্টারদাতাদের তালিকা বদলালেও বহাল রয়েছেন কারবারিরা। ফলে কোনোভাবেই সীমান্ত দিয়ে চিনি আসা বন্ধ হচ্ছে না। এতে সরকারকেও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে হচ্ছে।
প্রায় দুই বছর ধরে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছিল ভারতীয় চিনি। সীমান্ত এলাকা থেকে সিলেট মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চিনি পরিবহনের দেখভাল করতেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর ‘বুঙ্গার চিনি’ কারবারের রাজনৈতিক শেল্টারদাতারা লাপাত্তা হয়ে গেছেন। বেশির ভাগই ওই চোরাকারবারিদের সহায়তায় সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে শেল্টারদাতা পরিবর্তন হলেও সিলেটে বন্ধ হয়নি ভারতীয় চিনির কারবার। যৌথ বাহিনীর অভিযানের মধ্যেও থেমে নেই চোরাকারবারিরা। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার চিনি সিলেট সীমান্ত হয়ে ভারত থেকে প্রবেশ করে পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। এরই মধ্যে যারা চিনির চালানসহ আটক হয়ে জেলে গিয়েছিলেন, তারাও জামিনে মুক্ত হয়ে ফের একই কারাবারে লিপ্ত হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের শাহ পরান (রহ.) থানাধীন পীরেরবাজার এলাকা থেকে ৩০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে পুলিশ। এ সময় আটক করা হয় তিনজনকে। এ তিনজনের মধ্যে দুজন আগেও চিনিসহ আটক হয়েছিলেন। পরে জামিনে বের হয়ে ফের একই কাজে জড়িয়েছেন। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের গণমাধ্যম কর্মকর্তা, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ভারতীয় চিনির ব্যবসার নেপথ্যে কারা জড়িত তা আগে শনাক্ত হয়নি। চালানসহ যারা ধরা পড়ত বেশির ভাগ মহানগরীর বাইরের হওয়ায় তাদের কাছ থেকে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যেত না। ৫ আগস্টের পর পুলিশের লজিস্টিক সাপোর্ট অনেক কমে গেছে।
অনেক গাড়ি ও থানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও চোরাকারবারি চক্রকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে পুরোদমে পুলিশি কার্যক্রম শুরু হবে। তখন চোরাকারবারিরা পার পাওয়ার সুযোগ পাবে না।