তাপপ্রবাহে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম। গত শুক্রবার মৌসুমের রেকর্ড সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পরদিনই ভেঙে গেছে সেই রেকর্ড। শনিবার চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৭ ডিগ্রি। গতকাল রবিবারও সর্বোচ্চ ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। সেই সঙ্গে বাতাসে ছিল অত্যধিক আর্দ্রতা। ফলে অনুভূত তাপমাত্রা ছিল আর বেশি। তাপপ্রবাহের কারণে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি মিলছে না। তীব্র গরমে শরীর ঘামছে বিরতিহীন। হাঁসফাঁস অবস্থা শ্রমজীবীদের। এরমধ্যে দিনভর বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় নাজেহাল অবস্থা জনজীবনে। আবহাওয়া অফিস জানায়, চট্টগ্রামে গত শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি আর সর্বনিম্ন ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৫৩ শতাংশ যা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ। এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের হিসেবে গত তিন দিনে চট্টগ্রামে কোনো লোডশেডিং না থাকলেও চট্টগ্রামজুড়ে দিনভর বিদ্যুতের আসা-যাওয়া অব্যাহত আছে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনে সকাল, দুপুর ও বিকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের অনুপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, কিছু ক্ষেত্রে সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন ব্যবস্থাপনার স্বার্থে বিদ্যুৎ সরবরাহ মাঝে মাঝে বন্ধ রাখতে হয়। এটাকে লোডশেডিং বলা যাবে না।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চট্টগ্রামের বিতরণ বিভাগের (দক্ষিণাঞ্চল) প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির মজুমদার জানান, শুক্রবার ভোর ৫টার পর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ ছিল। এ ছাড়াও নগরে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের ঠিকাদারদের অনুরোধেও দিনের বিভিন্ন সময়ে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হয়। এর বাইরে অনেক সময় বৈদ্যুতিক লাইনে নানা জটিলতার কারণে সরবরাহ সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়। এগুলোকে লোডশেডিং হিসেবে ধরা হয় না।
তবে যে কারণেই হোক, বিদ্যুতের এই ভেল্কিবাজিতে অতিষ্ঠ নাগরিকরা। বিশেষ করে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে বাসাবাড়ি, অফিসে বৈদ্যুতিক পাখা কিংবা শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ছাড়াও এক মুহূর্তও স্বস্তিতে থাকা যাচ্ছে না। নগরীর বাগমনিরাম সড়কের বাসিন্দা রাহাত আলী বলেন, সুনির্দিষ্ট কারণ যদি জানানো না হয় তাহলে কী কারণে বিদ্যুৎ যায়-আসে সেটা তো গ্রাহকদের জানার কথা না। কয়েক দিন ধরে প্রতিদিন ভোরবেলা বিদ্যুৎ চলে যায়। ২-৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসে না। গরমের কারণে বিছানা ছেড়ে উঠে যেতে হয়। সারা দিন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পানিও উত্তোলন করা যাচ্ছে না।