জুলাই ঘোষণা নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। জুলাই সনদ অবশ্যই সংবিধানে সংযুক্ত করতে হবে। এই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের মর্যাদা, স্বীকৃতি এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের রাজনৈতিক নিরাপত্তার কথা থাকতে হবে।
দিনাজপুর বড়মাঠ থেকে ‘জুলাই পদযাত্রা’র চতুর্থ দিনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৬টায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠে বক্তব্য দিতে গিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর হতে যাচ্ছে। এই এক বছরে আমাদের স্বপ্ন ছিল, আশা ছিল—দেশ পরিবর্তন হবে। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয় নাই। ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। আমরা দেখতে পারছি সেই স্বৈরাচারী সরকারের রেখে যাওয়া কাঠামো এখনও বহাল রাখা হয়েছে। সেই আগের লুটেরা, দুর্নীতিবাজদের আত্মরক্ষা করা হচ্ছে।
নাহিদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ, ছাত্র জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল নতুন কাঠামো, নতুন রাষ্ট্র, নতুন দেশের জন্য। একটা দলকে সরিয়ে আরেকটা দলকে বসানোর জন্য আন্দোলন করি নাই। আমরা মাঠে নেমেছি গণঅভ্যুত্থানের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে। সেই ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলুপ্ত করে নতুন রাষ্ট্র, গণতন্ত্র ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের এই যাত্রা।
দিনাজপুরবাসীর উদ্দেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, আমরা জানি দিনাজপুরের মাটি ইতিহাসের সাক্ষী। সেই ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে নীল বিদ্রোহ থেকে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান—অন্যায়ের বিরুদ্ধে দিনাজপুরের মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এই জেলার কৃষকেরা নীল বিদ্রোহে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। ’৭১-এ এই জেলার মানুষ পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল।
তিনি বলেন, ধান-চালের জেলা দিনাজপুরের কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পায় না। খাদ্য ভাণ্ডার দিনাজপুরের উৎপাদিত চাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। দিনাজপুর উৎপাদন করবে, ঢাকা ভোগ করবে—এই দেশ আমরা চাই না। আঞ্চলিক বৈষম্য আমরা চিরতরে বিদায় করতে চাই।
এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দলের নেতাদের নিয়ে দিনাজপুর বড়মাঠ থেকে পায়ে হেঁটে পদযাত্রায় অংশ নেন। প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক পায়ে হেঁটে দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠে এসে সংক্ষিপ্ত পথসভায় বক্তব্য দেন। এ সময় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, ডা. আব্দুল আহাদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, ডা. তাসনিম জারা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল