চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের ২৯-এ নম্বর শয্যা। এখানে শুয়ে আছে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ফারহান তানভীর রাহাত (১৪)। নির্যাতনে ভেঙেছে বাঁ-হাত। আঘাত পেয়েছে হাতে। পুরো পিঠজুড়ে জমাট রক্ত। অন্যদিকে, হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডের ১১ নম্বর শয্যায় শুয়ে আছে আরেক শিক্ষার্থী মো. মানিক (১৪)। তারও নেই নড়াচড়া। হাতে স্যালাইন। জখমের স্থানগুলোতে আছে ব্যান্ডেজ। ভেঙেছে ডান হাত। হাতটি চাদরে ঢাকা। থেঁতলে গেছে মাংসপেশি। গত শুক্রবার ভোরে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কাঞ্চননগর ইউনিয়নের কাঞ্চন গ্রামের চেইঙ্গার ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে তিন কিশোরকে মব সৃষ্টি করে ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে মারধরের ঘটনায় মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয় এ দুই কিশোর। চার দিন পার হলো, কিন্তু এখনো তাদের পুরোপুরি জ্ঞান ফেরেনি। কখনো চোখ খুলে, আবারও বন্ধ করে ফেলে। ফলে দুই পরিবারের মধ্যে ভর করেছে শঙ্কা, উৎকণ্ঠা। তারা জানেই না তাদের প্রিয় দুই সন্তান কখন পুরোপুরি সুস্থ হবে। এ ঘটনায় দুই পরিবারই এখন ট্রমার মধ্যে দিন পার করছে। দুই পরিবারের চোখে-মুখে এখন দুশ্চিন্তা।
গতকাল সকালে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে মানিকের মা রোজিনা আক্তার বলেন, মানিকের পুরোপুরি জ্ঞান ফেরেনি। ডাকার পর মাঝে মাঝে চোখ খুললেও আবার বন্ধ করে ফেলে। হাত-পা নড়াতে পারছে না। চিকিৎসক কিছু টেস্ট করার জন্য বলেছেন। রক্তও লাগতে পারে। অস্ত্রোপচারও প্রয়োজন হতে পারে। আমার ছেলের কি অপরাধ ছিল। কার কাছে বিচার চাইব আমি। আমরা তো এখন ছেলে নিয়ে শঙ্কায় আছি। এ ঘটনায় মুহাম্মদ নোমান (২২), মুহাম্মদ আজাদ হোসেন (২৩) ও ফারাজ উদ্দিন নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও অন্যরা এখনো অধরা।