বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

যৌনকর্মীদের প্রত্যাবর্তণ নিয়ে টাঙ্গাইলে উত্তেজনা

যৌনকর্মীদের প্রত্যাবর্তণ নিয়ে টাঙ্গাইলে উত্তেজনা

টাঙ্গাইল পতিতাপল্লী থেকে উচ্ছেদ হওয়া অন্তত দুই হাজার যৌনকর্মী আবার কান্দাপাড়া যৌনপল্লীতে ফিরতে শুরু করেছে। রাতে তারা টাবু ও পলিথিন টাঙ্গিয়ে থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ফিরে আসা যৌনকর্মীরা টিন ও বাঁশ দিয়ে যার যার ঘর তৈরীর কাজ শুরু করেছে।

এদিকে টাঙ্গাইল অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটি গত রাত থেকেই যৌনকর্মীরা ফিরে আসার প্রতিবাদে প্রতিটা পাড়া মহল্লায় মাইকিং করেছে। সকালে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন তারা। প্রতিরোধ কমিটি ও যৌনকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়ায় শহরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শহরের কান্দাপাড়া পতিতা পল্লীকে ঘিরে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

যৌনকর্মীদের সরর্দানী আখি বেগম জানায়, আর কোন অশুভ শক্তিই আমাদের এ জায়গা থেকে সড়াতে পারবে না। যারা উচ্ছেদ করেছে, তারা যে অন্যায় করে আমরা সে রকম অন্যায় করি না। শুধু আমরা দেহ বিক্রি করে জীবন ধারণ করি। মরলে আমরা এই জমিতেই মরতে চাই। আমাদের যে সকল মেয়েরা (যৌনকর্মী)অন্যান্য যৌনপল্লীতে আশ্রয় নিয়েছিল তারাও আসতে শুরু করেছে। ৩০/৪০ জন যৌনকর্মীর নিজের নামে এখানে জায়গা রয়েছে। তারাও পুনরায় ঘর তৈরীর কাজ শুরু করেছে। সেই সাথে বাহিরের যে মালিকদের জায়গা রয়েছে তারা ঘর তৈরীর কাজ শুরু করবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে সকালে বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে হাজার হাজার মুসল্লি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে জমায়েত হতে থাকে। পরে তারা মসজিদে এ সমাবেশ করে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পতিতা পল্লীর দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ আমঘাট রোডে বেড়িগেট দিয়ে থামিয়ে দেয়। পরে তারা রাস্তায় বসে অবস্থান নেয়। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মোঃ মাহবুব হোসেন জানান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে প্রধান করে ৩ সদস্যের যৌনপল্লী বিষয়ক একটি কমিটি রয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, তাদের সাথে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলে অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির আন্দোলনের মুখে গত ১২ জুলাই রমজান মাসে প্রায় দুই'শ বছরের পুরনো কান্দাপাড়া যৌনপল্লীর প্রায় সাড়ে ৮০০ যৌনকর্মীসহ প্রায় ২ হাজার নারী একরাতেই তাদের আবাসন ছেড়ে চলে যায়। এরপর থেকে যৌনপল্লী এলাকা জনমানব শূন্য হয়ে পড়ে। যৌনকর্মীরা চলে যাওয়ার পর থেকেই যৌনপল্লীর ঘরবাড়ি ভাঙ্গার কাজ শুরু করে দেয় ৫৬ জন বাড়ির মালিক ও সরর্দানীরা। সরর্দানী ও পতিতা মিলে প্রায় ৯'শ যৌনকর্মীরা এখানে যৌন পেশায় নিয়োজিত ছিল। প্রায় দুই'শ বছর আগে লৌহজং নদীর তীরবর্তী কান্দাপাড়া নামক স্থানে এই যৌনপল্লী গড়ে উঠেছিল।



 

সর্বশেষ খবর