রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

মরে যাচ্ছে বুড়ি তিস্তা

নদীর বুকে আবাদ হচ্ছে ফসল

মরে যাচ্ছে বুড়ি তিস্তা

পঞ্চগড়ে শুকিয়ে যাওয়া বুড়ি তিস্তা নদীতে বোরো আবাদ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মরে যাচ্ছে বুড়ি তিস্তা নদী। পঞ্চগড়ের বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলায় প্রবাহিত খরস্রোতা আন্তসীমান্ত নদী বুড়ি তিস্তা। এক বছর আগে খনন করা হলেও নদীটি পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। নদীটি শুকিয়ে পানি শূন্য হয়ে পড়ায় সরকার ২০১৯ সালে খননের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু খননের এক বছর পেরুতে না পেরুতেই আবারও মরে যাচ্ছে এই নদী। বর্তমানে এই নদীর বুকে দুলছে বোরো ধানের আবাদ। নদীটি পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। এ নদী হারিয়ে গেলে এই এলাকায় কৃষিকাজে ক্ষতি হবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। পরিবেশবাদীরা বলছেন অপরিকল্পিতভাবে নদীটি খনন করা হয়েছে। খনন করে নদীটির ক্ষতি হয়েছে। সরকারি বরাদ্দের টাকা জলেই ভেসে গেছে। বুড়ি তিস্তা ভারতে উৎপত্তি হয়ে এই নদী বাংলাদেশে প্রায় ২৪ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। এই নদী গভীর এবং স্রোতস্বিনী ছিল গত এক যুগ আগেও। বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে নদীটির অপরিসীম ভূমিকা ছিল। পানি সম্পদ এবং দেশি মাছ উৎপাদনে বুড়ি তিস্তার ব্যাপক অবদান থাকলেও আস্তে আস্তে নদীটি সংকীর্ণ হতে থাকে। গভীরতা কমে যায়। অর্ধমৃত নদীতে পরিণত হয়। সরকার নদী খননের ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করলে এই নদী খননের প্রস্তাবনা দেয় পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ৬৪ জেলায় ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনর্খনন প্রকল্পের ৬ কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৯ সালের ১৮ মে এই নদী খনন কার্যের উদ্বোধন করেন। একই বছরের ১৯ নভেম্বর নদীর খনন কাজ শুরু হয়। নদী খনন শুরু হলে স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। কিন্তু একবছরের মধ্যে নদীটি মরে যাবার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় হতাশা নেমে এসেছে। নদীটির প্রশস্থতা একশ থেকে দেড়শ ফিট হলেও খনন করা হয় মাত্র ২০ মিটার। মাত্র ৬ ফিট গভীর করে খনন করা হয়। খননের পর নদীটির উভয় পাড় সুরক্ষিত এবং লোক চলাচলের ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও এসব কিছুই করা হয়নি। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদীটি আবার বালি মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে যায়। পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, বুড়ি তিস্তা খননে পরিকল্পনার কোনো ভুল ছিল না। পঞ্চগড়ের মাটির চরিত্র আলাদা। খনন করলেও বর্ষার স্রোতে মাটি গলে যায়।

 ফলে নদী খুব তাড়াতাড়ি ভরাট হয়ে যায়। বেশ কয়েকবার খনন করলে দুই পাড় ঠিক হয়ে যাবে। পরে দীঘস্থায়ীভাবে আর ভরাট হবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর