রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নাটোরে দ্বিগুণ দামে সার বিক্রি

আমন আবাদ নিয়ে বিপাকে কৃষক

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অধিক মূল্যে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ডিলার, সাব-ডিলার ও নন-কার্ডধারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। ফলে সরকার নির্ধারিত মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে আমন আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। জানা যায়, সরকার নির্ধারিত মূল্য প্রতি বস্তা (৫০) কেজি ইউরিয়া ১১০০, টিএসপি ১১০০, ডিএপি ৮০০ ও এমওপি ৭৫০ টাকা। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত মূল্যের অধিক দামে সার বিক্রি করছেন। বিভিন্ন গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, তারা প্রতি বস্তা ইউরিয়া ১৩০০ থেকে ১৪০০, টিএসপি ১৭০০-১৮০০, ডিএপি ১৭০০-১৮০০ ও এমওপি ১৩০০-১৪০০ টাকায় কিনছেন। তিরাইল এলাকার ইদ্রিস আলী বলেন, ‘আমি কয়েক বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছি। কোনো ডিলার বা সাব-ডিলারের কাছে সার পাইনি। খুচরা বিক্রেতার দোকানে সরকারি রেটের প্রায় দেড় গুণ দামে সার কিনেছি। নন-কার্ডধারী কয়েকজন সার ব্যবসায়ী জানান, ডিলার ও সাব-ডিলারের কাছে সরকারি রেটের অধিক মূল্যে রসিদ ছাড়াই সার কিনতে হয়। আমরা তা বস্তাপ্রতি কিছু লাভে কৃষকের কাছে বিক্রি করি। উপজেলা সাব-ডিলার সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, সাত ইউনিয়নে একজন করে এবং দুই পৌরসভায় দুজন করে মোট ১১ জন বিসিআইসির মূল ডিলার রয়েছেন। প্রতি ইউনিয়নের বিসিআইসির মূল ডিলারের প্রাপ্ত সারের ৫০ শতাংশ ৯ ভাগে ভাগ করে তার এক ভাগ একজন সাব-ডিলার পেয়ে থাকি-যা পরিমাণে খুবই কম। পরবর্তীতে মূল ডিলাররা বাকি সার নন-কার্ডধারীদের কাছে গোপনে বিনা রসিদে বেশি দামে বিক্রি করেন। এ জন্য কুষক বাজারে নন-কার্ডধারীদের কাছ থেকে বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। জোয়াড়ী ইউনিয়নের বিসিআইসির মূল ডিলার ঊর্মি ট্রেডার্সের মালিক অজয় কুমার বলেন, আমার অধীনে পাঁচজন সাব-ডিলার আছেন। সরকারি বিধি মোতাবেক রেজিস্ট্রার খাতায় স্বাক্ষর করে সার নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তারা স্বাক্ষর করেন না। ভ্যানচালকের মাধ্যমে চিরকুট ও টাকা পাঠিয়ে সার নেন। বাজারে যেহেতু থাকি পরিচিত কিছু নন-কার্ডধারী ব্যবসায়ী সার নিতে এলে না দিয়ে পারি না। এটা কৃষি অফিসাররাও জানেন। বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, কৃষি কর্মকর্তা ও ডিলার সিন্ডিকেট তৈরি করেছে বড়াইগ্রামে। সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। বারবার উপজেলা মিটিংয়ে সিন্ডিকেটের বিষয়ে সতর্ক করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, সারের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য পৌর ও ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে উপ-সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা সবসময় বাজার মনিটরিং করছেন। কেউ মজুদ বা বেশি দামে সার বিক্রি করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হবে।

সর্বশেষ খবর