রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

লালমনিরহাটে মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটে মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ

লালমনিরহাটে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষার ফুলে ঢাকা।  চারদিকে তাকালেই দেখা যায় হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। ফুলের সঙ্গে মৌমাছির গুঞ্জন শুনতে বেশ ভালো লাগে। সরিষার মাঠে গেলে ফুলের গন্ধে মন ভরে ওঠে। হলুদ রং মন কেড়ে নেয়। প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না হলে এ বছর লালমনিরহাটে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করছেন বলে জানা গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় এই সময়ে প্রচুর পরিমাণে সরিষার আবাদ হয়। ফলনও হয় বেশ ভালো। আমন ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে কৃষক কোমর বেঁধে মাঠে নামেন সরিষার আবাদ করতে। এক সময় লালমনিরহাটে আমন ধান কাটার পর বিস্তীর্ণ জমিগুলো পড়ে থাকত। কিন্তু বর্তমানে লালমনিরহাটে আমন ধানের জমিতে সরিষার আবাদ হচ্ছে। কৃষকরা আশা করছেন, কোনো রোগবালাই না হলে এবার লালমনিরহাটে সরিষার বাম্পার ফলন হবে। লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠে ব্যাপক হারে সরিষার চাষ হয়েছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামের কৃষক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ বছর তিনি ১ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার রোগবালাই দেখা দেয়নি। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে বিঘা প্রতি ৪ থেকে ৬ মণ হারে সরিষার ফলন হবে। ফুলগাছ গ্রামের কৃষক মো. হযরত আলী বলেন, সরিষা আবাদের পরই জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা যায়। এতে জমিতে সার কম লাগে। তাছাড়া সরিষার পাতা ও শিকড় সবুজ সারের কাজ করে এবং বোরো ধানের ফলনও ভালো হয়। ফুলগাছ ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম খন্দকার বলেন, সরিষার চাষে লাভ বেশি, খরচ কম। তাছাড়া সহজেই বিক্রি করা যায়। সরিষার আবাদ ঘরে তোলার পর ওই জমিতেই আবার কম সারে বোরো ধানের চাষ করা যায়।

তাই লালমনিরহাটে কৃষকরা সরিষার চাষ করে আসছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর লালমনিরহাটের উপপরিচালক মো. হামিদুর রহমান জানান, লালমনিরহাটে এ বছর ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। আমরা কৃষককে একের অধিক ফসল ফলানোর জন্য নানাভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। তাছাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠে কৃষকের সঙ্গে অবস্থান করছেন, যাতে কৃষকের কোনো প্রকার সমস্যার সৃষ্টি না হয়। আশা করা হচ্ছে, প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না ঘটলে এবার লালমনিরহাট জেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে। চাষিরা হবেন ব্যাপক লাভবান।

 

সর্বশেষ খবর