জীর্ণ কুটির। মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। পরিবারে সদস্য সংখ্যা চারজন। সবাই জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। কারও নেই শ্রবণ শক্তি। কেউ দৃষ্টিহীন। বর্তমানে প্রাপ্ত বয়স্ক হলেও নিজ নিজ প্রয়োজন মেটাতে অক্ষম তারা। কে করবেন কার দেখভাল? এর মধ্যে অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী। এ অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার এক পরিবারের প্রতিবন্ধী চার ভাই-বোন। তারা উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের পাঠানেরগাঁও গ্রামের মৃত মন্টাই মিয়ার সন্তান। চার ভাই-বোনের মধ্যে রুবিনা বেগম (৩০) শ্রবণ প্রতিবন্ধী, মিনারা বেগম (২৬) ও রুকশানা বেগম (২০) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবং তাদের একমাত্র ভাই লিলু মিয়া (২৪) বহুবিধ প্রতিবন্ধী।
জানা যায়, মেয়ে রুকশানা জন্মের দুই বছর পর মারা যান বাবা মন্টাই মিয়া। এরপর ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’-সংসারের হাল ধরেন তার স্ত্রী ফুলতেরা বেগম। চেয়ে-চিত্তে বিয়েও দেন বড় মেয়ে। এর কয়েক মাস পর তিনিও পাড়ি জমান পরপারে। প্রতিবেশীরা বিয়ে দেন দ্বিতীয় মেয়ে রুবিনাকে। শ্রবণ প্রতিবন্ধী হওয়ায় সংসার টেকেনি বেশি দিন। ফিরে এসে রুবিনা নেন সবার দায়িত্ব। সেই থেকে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মিনারা বেগম জানান, মা-বাবা গত হওয়ার পর আমরা একেবারে অসহায় হয়ে পড়ি। বর্তমানে একমাত্র ভাইকে নিয়ে ভাঙা ঘরে খেয়ে না খেয়ে আছি। আমরা তিন ভাই-বোন সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। ভাতার টাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ওই পরিবারের তিন সদস্য প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। অপরজনকেও ভাতার আওতায় আনা যায় কিনা দেখছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক।
সমাজসেবা অফিসের সঙ্গে কথা বলে তাদের জন্য অর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।