চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরের চকবাজার হিজড়া খালে পড়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু কমিটি গঠনের পর ১২ কার্যদিবস পার হলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে ইটের প্রতিরোধ দেয়াল দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ এপ্রিল খালে পড়ে মারা যায় ছয় মাসের শিশু সেহরিস। নগরের খাল ও নালা-নর্দমা রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করে চসিক ও সিডিএ। গত ছয় বছরে নগরে বিভিন্ন খালে অন্তত ১৪ জন নারী-পুরুষ ও শিশু নিখোঁজ ও মৃত্যু হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি সপ্তাহেও প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হবে না। তা ছাড়া, চার সদস্যের কমিটি পুনর্গঠন করে কমিটিতে নতুন করে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রতিনিধি যুক্ত করা হবে। কমিটির সদস্যরা গত ২৪ এপ্রিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন।
চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন বলেন, আমরা বিশেষজ্ঞ সদস্যদের পরামর্শে একটি কার্যকর সুপারিশ তৈরি করতে চাই। তাই অরক্ষিত খাল ও নালা-নর্দমাগুলোর টেকসই ও স্থায়ীভাবে সুরক্ষিত করার সুপারিশ করা হবে। এ জন্য কমিটিতে বিশেষজ্ঞ সদস্যদের যুক্ত করা হবে। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি পাঠাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চুয়েটকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। কারণ চিহ্নিতের পাশাপাশি খাল ও নালা-নর্দমায় পড়ে যাতে আর কারও মৃত্যু না হয় সে বিষয়টাকে বিবেচনায় রেখেছি।
জানা যায়, নগরে ৫৭টি খাল এবং ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার নালা আছে। এর মধ্যে ৩৬টি খাল ও বড় নালাগুলোর সংস্কার কাজ করছে সিডিএ। তবে খালে পড়ে শিশু মৃত্যুর পর চসিক ৪১ ওয়ার্ডের ৬টি জোনে মোট ৫৬৩টি জায়গাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করে। এর মধ্যে ১ নম্বর জোনে ৪৭টি, দুই নম্বর জোনে ৭৮টি, ৩ নম্বর জোনে ৬৮টি, চার নম্বর জোনে ৭৪টি, ৫ নম্বর জোনে ৩৩টি এবং ৬ নম্বর জোনে ২৬৩টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে। তালিকা অনুযায়ী, দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পরিমাপের ৮৬৩টি স্ল্যাব বসাতে হবে। তাছাড়া, বেষ্টনী নেই ১৪৬ জায়গায়। ম্যানহোল নেই কয়েকটি স্পটে। এরপর চসিক তালিকা মতে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণের কাজ শুরু করে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসানো হচ্ছে স্ল্যাব।