চট্টগ্রাম র্যাব কার্যালয়ের নিজ অফিসকক্ষ থেকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হওয়া এএসপি পলাশ সাহার গ্রামের বাড়িতে চলছে মাতম।
গতকাল সকাল ১০টায় র্যাব-৬-এর কমান্ডিং কর্মকর্তা কমান্ডার শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ফ্রিজার গাড়িতে পলাশ সাহার লাশ গ্রামের বাড়ি কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশীতে পৌঁছায়। লাশ দেখতে সহপাঠী, প্রতিবেশী ও স্বজনরা বাড়িতে ভিড় করেন। স্বজনদের কান্না ও আহাজারিতে শোকাবহ হয়ে ওঠে সাহাবাড়ির পরিবেশ। পরিবারের লোকজন তাঁর স্ত্রী সুস্মিতা সাহার বিচার দাবি করেছেন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষে শেষকৃত্যের জন্য পলাশ সাহার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় পৌরসভার পারকোনা মহাশ্মশানে। সেখানে তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান এবং ফুল দিয়ে শ্রদ্ধানিবেদনের মধ্য দিয়ে দুপুরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পলাশের মেজো ভাই নন্দলাল সাহা বলেন, ‘দুই বছর আগে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন চৌধুরীপাড়ার সুস্মিতা সাহার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় পলাশ। বিয়ের ছয়-সাত মাস পরই শুরু হয় সংসারে অশান্তি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পলাশ চেয়েছিল মা ও স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে। কিন্তু তার স্ত্রী এটি ভালোভাবে মেনে নিতে পারছিল না। মা বাসায় না থাকতে চাইলে পলাশ কষ্ট পেত। বাসায় থাকলে স্ত্রী সহ্য করতে পারত না। এ নিয়ে প্রায়ই ঝামেলা লেগে থাকত। ভাই চলে গেল, আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল।’ প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও র্যাব-৭ ক্যাম্পে অভিযানের প্রস্তুতি চলছিল। এজন্য নিজের কক্ষে যান পলাশ সাহা। এ সময় সহকর্মীরা গুলির শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তাঁকে। নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পলাশ আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা র্যাব কর্তৃপক্ষের।
তাঁর রক্তাক্ত লাশের পাশেই পড়ে ছিল একটি চিরকুট। সেখানে এ মৃত্যুর জন্য নিজেই দায়ী বলে উল্লেখ করেন। ওই চিরকুটে আরও উল্লেখ ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের ওপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো-অর্ডিনেট করে।’