নৌপথের দেড় শ বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ নৌযান স্টিমার। রাজধানীর ঢাকার সঙ্গে নদীপথে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের চলাচলের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম ছিল বিআইডব্লিউটিসির স্টিমার সার্ভিসটি। কিন্তু অবহেলায় আড়াই বছর আগে থেমে যায় স্টিমার চলাচল। সম্প্রতি স্টিমার ফের চালু করার ঘোষণা দেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। কবে নাগাদ চালু হবে সেই বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেনি বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল কার্যালয়।
বরিশালে স্টিমার ভেড়ানোর ঘাটটিও নেই। গত ১০ মে বরিশালে সাংবাদিকদের নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছিলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী স্টিমার আবার চালু হবে। এ ঘোষণায় বরিশালবাসী আনন্দিত। ঐতিহ্যবাহী স্টিমার চালুর অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয় জানিয়েছে, দুটি স্টিমার চালুর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগে ঢাকা থেকে ছেড়ে খুলনা পর্যন্ত যেত। পরে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করত। এখন কোন পর্যন্ত চালানো হবে, তা এখনো জানানো হয়নি। দেড় শ বছরের ঐতিহ্যবাহী পিএস অস্ট্রিচ, পিএস মাহসুদ, পিএস লেপচা, পিএস টার্ন, নতুন এমভি বাঙালি ও এমভি মধুমতী রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ঘাটে পড়ে থাকা এসব স্টিমার এখন চলাচল উপযোগী নেই। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, প্যাডেল স্টিমারের মধ্যে পিএস অস্ট্রিচ ও মাহসুদ ঢাকা-বরিশাল নৌপথে পর্যটকদের জন্য চলাচল করবে। পিএস লেপচা ও টার্ন বরিশাল ও খুলনায় ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। এমভি মধুমতী ও এমভি বাঙালির পরিচালন ব্যয় অধিক। সেখানে কোন দুটি চলাচল করবে সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। কর্মকর্তারা বলেন, প্যাডেলচালিত স্টিমার ধীরগতি সম্পন্ন। আর মধুমতী ও বাঙালির পরিচালনায় প্রতি ট্রিপে অন্তত ৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে। বর্তমানে যাত্রীরা দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে চান। তাই নৌপথের চেয়ে যাত্রীরা সড়কপথে বেশি যাতায়াত করেন। সেক্ষেত্রে যাত্রী নিয়ে সংশয় রয়েছে। ২০২৩ সালের ঈদের আগে ১৪ দিনের জন্য ফিরেছিল স্টিমার সার্ভিসটি। কিন্তু যাত্রীদের তেমন আগ্রহ না থাকায় তিনটি ট্রিপ দেওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায়। তবে ঐতিহ্য ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য স্টিমার চালু রাখা যেতে পারে। এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. জসীমউদ্দীন বলেন, আমাদের ঢাকা থেকে এখনো কোনো কিছু জানায়নি। উপদেষ্টা মহোদয় জানিয়েছিলেন ছয় মাসের মধ্যে চালু হবে। এখনো সময় আছে। এর মধ্যে ঘাটের উন্নয়নকাজ শেষ না হলে নৌবন্দরে ভেড়ানো হবে। অন্যান্য ঝালকাঠি, কাউখালী, হুলারহাট ও বড়মাছুয়া ঘাট প্রস্তুত রয়েছে।