বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধনে হামলার অভিযোগে স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক রনি, কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফিসহ ১২ জনের নামে ও অজ্ঞাত ৩০ জনসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ওই অভিযোগ দিয়েছেন। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান গতকাল বিকালে বলেন, অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার বাদী হলেন ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্রশীল।
অভিযোগে উল্লেখ করা ১২ জন হলেন-স্বাস্থ্য খাত সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মহিউদ্দিন রনি, রাকিন, সুনান, সিফাত, শামিম, আল মুসা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেত্রী সিফা, হাসপাতালে অনশন করে অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থী দাইয়ান, কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফি, এইচ এম আবুল খায়ের, হাসপাতালের দালাল নুরুন নাহার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর মো. সিয়াম ওরফে ন্যাভাই।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় শেবাচিম হাসপাতালের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশের দাবিতে মাঝের গেটের সামনে চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় অভিযুক্তরা চাপাতি, লোহার রড, এসএস পাইপ, হকিস্টিক, লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে পরিচ্ছন্নতাকর্মী রফিকুল পাটোয়ারী, হাসান, সাকিব, জাকারিয়া রুবেল, অফিস সহায়ক ফয়সাল রাব্বি, আয়া সুমরত মণ্ডল, লিফট অপারেটর শাকিলসহ মানবন্ধনে অংশ নেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আহত হন। এমনকি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নারী নার্সদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
অপরদিকে এ অভিযোগ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। তারা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ছড়িয়ে পড়া কোনো ভিডিওতে আন্দোলনকারীরা হামলা চালিয়েছেন-এমন দৃশ্য নেই, কিন্তু হাসপাতালের স্টাফদের পোশাক পরিহিত ব্যক্তিরা মব সৃষ্টি করে আন্দোলনকারীদের ওপর যে হামলা চালিয়েছে, তার প্রমাণ রয়েছে।
এর আগে কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উপপরিচালক ডা. এস এম মনিরুজ্জামান শাহীনকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর।