বাসে যাতায়াত করতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়ার প্রবণতা অনেক আগের। ভাড়া নির্ধারণের সময় ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে অর্ধেক নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। পঞ্চগড়ে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করার জন্য বাসে উঠেই শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া নিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের অভিযোগ হাফ ভাড়া দিতে গেলেই বাস কর্তৃপক্ষ নানাভাবে হয়রানি করছে। তাদের কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চান কন্ডাক্টর। দেখালেও হাফ ভাড়া নিতে চান না। শিক্ষার্থীদের অনেক সময় অন্য যাত্রীর সামনে অপমান করা হয়। কখনো তাদের আসন থেকে উঠিয়ে দেওয়াসহ কাউন্টারে নিয়ে ব্যাগ সার্চ করে বইপত্র দেখে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না থাকলেও বাসের ভিতরে হেলপাররাই চিৎকার করে স্কুল বন্ধ বলে জানান।
এমন হয়রানি প্রায় প্রত্যেক বাসেই ঘটছে বলে জানিয়েছে একাধিক শিক্ষার্থী। মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবিদ হোসেন জানান, অমরখানা থেকে বাসে উঠি। মূল ভাড়া ৩০ টাকা। আমি শিক্ষার্থী তাই ১৫ টাকা ভাড়া দিতে চাই। কিন্তু কন্ডাক্টর এ নিয়ে আমার সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেয়। তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ এখন বন্ধ হাফ ভাড়া কেন? কিন্তু আমাদের কলেজ-তো বন্ধ না। আমাদের কোচিং থাকে, প্রাইভেট থাকে। তাই প্রতিদিন ক্যাম্পাসে যেতে হয়। সবশেষে যাত্রীদের সামনে আমাকে বাস থেকে নেমে যেতে বলা হয়। অনেক শিক্ষার্থী হেলপার-কন্ডাক্টরের কাছে লাঞ্ছিত হন। অনেকে অপমান হওয়ার ভয়ে পুরো ভাড়াই দিয়ে দেন।
পঞ্চগড় পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (২৬৪)-এর সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও হাফ ভাড়া দিতে চায় অনেকে তখনই ঘটে বিপত্তি। এ বিষয়ে অনাকাক্সিক্ষত কোনো ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়ে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নজর রাখছি।জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার পাশাপাশি সব সহায়তা করতে বাসমালিক এবং শ্রমিক নেতাদের প্রতি সরকারিভাবে নির্দেশনা জারি করা রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে হেনস্তা অথবা ভাড়া নিয়ে জটিলতার অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।