নওগাঁর ধামইরহাটে আলতাদিঘির জলে ডানা ঝাপটানো, ঝগড়া ও খুনসুটিতে মেতে ওঠা পরিযায়ী পাখির কলকাকলি দেখতে পর্যটক ও দর্শনার্থীর ভিড় লেগেই থাকত। দুই বছর আগেও এমন দৃশ্য ছিল সেখানে। কিন্তু সম্প্রতি সংস্কার ও পুনঃখননের নামে সর্বনাশ করা হয়েছে এ দিঘির। এখন খাঁখাঁ করছে। যেন একখন্ড মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে ঐতিহাসিক আলতাদিঘি। পুনঃখননের নামে পাল আমলের এ দিঘির চারপাশের গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। শুকিয়ে ফেলা হয়েছে দিঘিটি। মাঝেমধ্যেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে সেখানে। পুড়ে ছাই হচ্ছে আলতাদিঘি জাতীয় উদ্যানের বিশাল বিশাল শাল-সেগুনসহ অসংখ্য গাছ। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ, বিলুপ্ত হচ্ছে অজগর, বানর, বাঘসহ অসংখ্য বন্য প্রাণী। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদীরা। এ আগুন লাগার পেছনে বন বিভাগের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন তারা। জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৭ জুন সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এ দিঘি পুনঃখনন কাজ উদ্বোধন করেন। উদ্যানের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ প্রকল্পের নামে পুনঃখনন কাজে ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এটা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দিঘির চারপাশের ১ হাজার ২টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে আকাশমণি ৪৫৬টি এবং ইউক্যালিপটাস ৫৪৬টি। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, দিঘি পুনঃখননের নামে ২ হাজারের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এর মূল জলাশয় থেকে পাড়ের অনেক দূরের গাছ কাটা হয়েছে। আশপাশের প্রাকৃতিক শালবনের অনেক বড় গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। আলতাদিঘিতে ঘুরতে আসা বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, দিঘিপাড়ের গাছের ছায়ায় জমজমাট পিকনিক পার্টি হতো। দিঘির পাড়ে ঘুরে বেড়ানো, টলটলে জলে ভেসে থাকা সাদা ও গোলাপি পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করত অনেকে। দিঘিপাড়ের গাছ কেটে ফেলায় এখানে বেড়াতে এসে বিশ্রাম নেওয়ার মতো জায়গা পান না তারা। দিঘিতে পানি না থাকায় পর্যটকরা সৌন্দর্য উপভোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে এখানে আগের চেয়ে পর্যটক আসা অনেক কমে গেছে। কয়েকজন কলেজ শিক্ষার্থী জানান, দিঘির বর্তমান অবস্থা দেখে তারা ক্ষুব্ধ। আগে দিঘিপাড়ে বড় বড় উইঢিবি ছিল। দিঘিপাড় পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকত। কিন্তু এখন সেখানটায় খাঁখাঁ করছে। এ যেন মরুভূমি। রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরহাদ জাহান বলেন, ‘দিঘি পুনঃখননের ফলে প্রাকৃতিক শালবনের কোনো ক্ষতি হয়নি। দিঘিপাড়ের যেসব গাছ কাটা হয়েছে ওইসব গাছের জায়গায় শোভাবর্ধনকারী দৃষ্টিনন্দন গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’ বনবিট কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘আলতাদিঘি দীর্ঘদিন খনন ও সংস্কার না করায় এর গভীরতা কমে গিয়েছিল। তাই এটি পুনঃখনন ও পাড় সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছিল।’ ওই প্রকল্পের কনসালট্যান্ট হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ঠিকাদার কিছু গাফিলতি করেছিলেন। পরে চাপ প্রয়োগ করা হলে তিনি ঠিক করে দেন। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।’ তাদের অভিযোগ, কিছুদিন আগেও আলতাদিঘিতে ছিল সবুজের আভা। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে এখন খাঁখাঁ করছে জলাধারটি।
শিরোনাম
- খুচরা সার ডিলার বহাল রাখার দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন
- পূর্বাচলে প্লট দুর্নীতি : শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় ২৭ নভেম্বর
- কুলাউড়ায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ-সার বিতরণ
- বগুড়ায় ট্রাক চাপায় অটোরিকশা চালক নিহত
- টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আ.লীগের ৪৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
- রাজশাহীতে মাদকসহ ৬ কারবারি গ্রেপ্তার
- ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ডিএমপির ১০৪৫ মামলা
- ৪৮ ঘন্টার জন্য দেশের জ্বালানি কূপগুলোতে ড্রিলিং কার্যক্রম বন্ধ
- হবিগঞ্জে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা
- শেখ হাসিনা-রেহানার মামলার যুক্তিতর্ক ২৫ নভেম্বর
- রণবীরের সঙ্গে ট্রাম্পের হবু পুত্রবধূর নাচের ভিডিও ভাইরাল
- বড় ভূমিকম্প মোকাবিলায় কী পরিস্থিতি হবে, বলা যায় না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত কমনওয়েলথভুক্ত ৫৬ দেশ
- বিসিএস পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে ট্রেন আটকে রাখল শিক্ষার্থীরা
- সব ধরনের কাউন্টার সেবা বন্ধ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক
- শীতের দিনেও ব্যায়াম, যা খেয়াল রাখা জরুরি
- প্রশাসন আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে: জামায়াত নেতা শাহাজাহান
- মুখে বলিরেখা সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান
- বিশ্বকাপ : বাংলাদেশের সামনে পড়তে পারে ইতালি
- শুল্কের হুমকি দিয়ে আট যুদ্ধের পাঁচটিই থামিয়েছি: ট্রাম্প
সংস্কারের নামে সর্বনাশ
চারপাশের গাছ কেটে ফেলায় খাঁখাঁ করছে ঐতিহাসিক আলতাদিঘি
বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর