কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীন ছয় জেলায় এবার একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে খালি থাকবে প্রায় দেড় লাখ আসন। চলতি বছর এসএসসিতে পাসের হার কমায় এ অঞ্চলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংকট দেখা দিয়েছে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড বলছে, শিক্ষার্থী না পেলে অনেক কলেজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। সূত্র জানায়, এবার কুমিল্লা বোর্ডে এসএসসিতে পাস করেছে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৮১ জন শিক্ষার্থী। বোর্ডের অধীন কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় কলেজ রয়েছে ৪৭০টি। এগুলোতে আসন সংখ্যা ২ লাখ ৫৭ হাজার ৪৬০। সে হিসাবে দেড় লাখের বেশি আসন খালি থাকবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ একাদশে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষার্থী জানান, তাদের আগ্রহ শহরের কলেজে ভর্তি হওয়ার। কুমিল্লা জেলায় সরকারি কলেজের মধ্যে বেশি চাহিদা রয়েছে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি কলেজ ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড মডেল কলেজের। কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘কিছু সরকারি কলেজে শিক্ষক নেই। শিক্ষার মানও উন্নত নয়। অথচ সেখানে আসন বেশি রয়েছে। সেগুলো ভালো বেসরকারি কলেজে বণ্টন করা যেতে পারে।’ কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন লিটন বলেন, এসএসসিতে এবার পাসের হার কম। ফলে কলেজগুলো শিক্ষার্থী পাবে না। তার থেকে বড় কথা শিক্ষার্থীরা ফেলের পর ঝরে পড়বে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। শিক্ষার উন্নয়নে সরকারকে বড় প্রকল্প হাতে নিতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষায় আগ্রহ ও আনন্দ খুঁজে পায়।
কুমিল্লা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর মাসউদ বলেন, এবার এসএসসিতে পাসের হার কমলেও আমি বলব এটা প্রকৃত ফলাফল। শহরের প্রতিষ্ঠানের ফল সব সময় ৮০-৯০ ভাগ থাকে। এবার প্রথম গ্রামে ও শহরে লেভেল প্লেয়িং পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করেছে কুমিল্লা বোর্ড। এতে প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠেছে। যেসব কলেজ ভালো পাঠদান করছে তাদের শিক্ষার্থী পেতে সমস্যা হবে না। ভাষাসৈনিক অজিত গুহ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম বলেন, এবার পরীক্ষার পদ্ধতি সুশৃঙ্খল হয়েছে। এ ছাড়া ভেন্যু কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। ভেন্যু কেন্দ্রে একসময় শৃঙ্খলা ছিল না। এতে গ্রামের প্রতিষ্ঠানে ফলে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে হবে। অভিভাবকদের হতে হবে আরও সচেতন। কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর নুরুন নবী আলম বলেন, যে কলেজে ফল ভালো করে সেখানে শিক্ষার্থী বেশি ভর্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। অনেক কলেজ শিক্ষার্থী পাবে না। আমার মতামত হচ্ছে, কম শিক্ষার্থী পাওয়া কলেজ বন্ধ করে অন্যদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।