নানা সমস্যায় জর্জরিত মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ। প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করলেও সেভাবে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। ক্যাম্পাসে মাদকসেবীদের আড্ডা, নোংরা-আবর্জনা, মশার উপদ্রবসহ নানা কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজে ছাত্রদের একটি মাত্র হোস্টেল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। সীমানাপ্রাচীর না থাকায় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনা থাকে। তারা প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে। যা সাধারণ শিক্ষার্থী, বিশেষ করে ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। একটি মাত্র বাস দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। দুটি পুকুর ময়লা-আবর্জনায় ভরা। যা মশার উৎপাদনস্থলে পরিণত হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৯৪২ সালে ২৩.৭৮ একর জমিতে রণদা প্রসাদ সাহা কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে শিক্ষার্থী প্রায় ২৫ হাজার। ১৭ বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। তবে ভূগোল, সমাজবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, কৃষিবিজ্ঞানসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো খোলা হয়নি। শিক্ষার্থীরা জানান, বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী দেবেন্দ্র কলেজে পড়াশোনা করে। শিক্ষার্থী মিজান ও শরিফ বলেন, দৌলতপুর থেকে কষ্ট করে আসার পর যদি ক্লাস না হয় তখন কেমন লাগে? তাই মাঝেমধ্যে কলেজে আসি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা বলেন, স্যাররা ক্লাস নেওয়ার চেয়ে প্রাইভেট পড়াতে বেশি আগ্রহী। আমরা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কিছুই বলতে পারি না। ক্লাস চলার সময়েও অনেক শিক্ষক প্রাইভেট পড়ান। কলেজে সীমানাপ্রাচীর না থাকায় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আনাগোনায় আমরা আতঙ্কে থাকি। বন্ধ ছাত্র হোস্টেলসহ কলেজের উত্তর পাশে সব সময় বহিরাগতদের আনাগোনা লক্ষ করা যায়। তারা প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে। কেউ কিছু বলেন না। এসব বন্ধ না হলে কলেজেছাত্রী ভর্তি কমে যাবে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য মাত্র একটি পুরোনো বিআরটিসি বাস অনেক দিন ধরে নষ্ট। শিক্ষার্থী বাড়লেও সেভাবে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। এতে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলার ছাত্রীরা। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শহিদুজ্জামান বলেন, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করব। দ্রুত ছাত্রদের হোস্টেল সংস্কার করে থাকার উপযোগী করা হবে। এ ছাড়া আরেকটা ছয় তলা ভবন অনুমোদন হয়েছে। সীমানাপ্রাচীর করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এটি নির্মাণ হলে ক্যাম্পাসে আর বহিরাগত প্রবেশ করতে পারবে না। কিছু জমি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। নিষ্পত্তি হলেই এর সমাধান হয়ে যাবে। ভূগোল, সমাজবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, কৃষিবিজ্ঞানসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো খোলা জরুরি হয়ে পড়েছে।