কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিশুপার্ক। দীর্ঘদিন ধরে এটি প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। শুধু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম থাকার কারণে পার্কটি প্রায় দুই দশক ধরে অযত্ন-অবহেলায় ফেলে রাখা হয়েছে, অভিযোগ করেছেন শহরের সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের নেতারা। নোংরা রাজনীতির বলি এই শিশুপার্ক বলছেন তারা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এর আগে বিএনপি সরকারের শেষ সময় এবং নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদে প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন আনোয়ার আলী। তিনি নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কুষ্টিয়া জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি এক মেয়াদ বাদ দিয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার পাঁচবারের নির্বাচিত মেয়র। সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের দাবি নোংরা রাজনীতির অংশ হিসেবে শুধু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে হওয়ার কারণে পাঁচ মেয়াদে দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর আনোয়ার আলী পার্কটির উন্নয়ন তো দুরের কথা সংস্কারও করেননি। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, শুধু নামের কারণেই পার্কটি অযত্ন-অবহেলায় পড়ে ছিল। সেখানে মানুষ হাঁটার পরিবেশও ছিল না। সরেজমিন দেখা যায়, অযত্ন-অবহেলায় ঘাসে ঢেকে আছে চারপাশ। পরিবেশ নোংরা হয়ে গেছে। একসময় মানুষের ভিড় লেগে থাকা পার্কে এখন পুরো দিনেও মেলে না ৫০ দর্শনার্থী। পার্কটি পরিণত হয়েছে প্রেমিক যুগল আর বখাটেদের আড্ডা স্থলে। পার্কে ১৫টি হরিণ থাকলেও পরিচর্যার যথেষ্ট অভাব ফুটে উঠেছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বিভিন্ন জায়গায় মোজাইক উঠে গিয়ে ইট দেখা যাচ্ছে। পার্কে কাউন্টার ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম বলেন, সারা দিনে ২০-৩০ জন দর্শনার্থী আসেন। পার্কের শেষ প্রান্তে একটি খাঁচায় রয়েছে ১৫টি হরিণ। হরিণগুলোর জন্য খাঁচায় কোনো খাবার দেখা যায়নি। তবে দায়িত্বশীলরা জানান, প্রতিদিনই ঘাস ও অন্যান্য খাবার দেওয়া হয় হরিণগুলোকে।
পরিবেশকর্মী খলিলুর রহমান মজু বলেন, শিশুপার্ক শিশুদের নির্মল বিনোদনের জায়গা। সেখানে রাজনীতি কাম্য নয়। আমাদের দাবি থাকবে দ্রুত পার্কটির সংস্কার করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি গুলশানের একটি পার্ক আমরা পরিদর্শন করে দেখেছি, সেটা সবসময় জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকে। সেখানে শহরের বাসিন্দারা বিশ্রাম নিতে পারেন। আমরা সেই আদলেই জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক সাজানোর পরিকল্পনা করছি। দ্রুতই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।