বই উৎসবে ঝালকাঠি সদর উপজেলার নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন বই দিতে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা না দিতে পারায় ১ জানুয়ারি অনেক শিক্ষার্থীকেই ওই স্কুল থেকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
সারাদেশের ন্যায় গত ১ জানুয়ারি ঝালকাঠিতে শিল্পমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন বই উৎসব শুভ উদ্বোধন করেন। জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্ব স্ব আয়োজনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিত করে বিনামূল্যে বই বিতরণ করলেও নথুল্লাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঘটে উল্টোটা।
নতুন বই পেতে হলে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও স্কুলের মাসিক বেতন বাবদ ২শ' টাকা অগ্রিম প্রদান বাধ্যতামূলক করেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন। অন্যথায় বই প্রদান করা হবে না বলে ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে পূর্ব ঘোষণা না থাকায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন অনেক অভিভাবক।
এ ব্যাপারে সরেজমিন পরিদর্শনকালে বিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত ৭ম ও ৯ম শ্রেণির দুই ছাত্রীর অভিভাবক মুক্তিযোদ্ধা সুলতান হাওলাদার, ৮ম শ্রেণির ছাত্রীর পিতা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান, ৮ম শ্রেণির ছাত্র রায়হানের পিতা আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন জানান, টাকা না দেওয়ায় তাদের সন্তানদেরকে বই দেওয়া হয়নি।
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার দুই মাস পূর্বে ও বছর শুরুর প্রথম দিনে পূর্ব কোন নোটিশ ছাড়াই ২শ' টাকা না দিলে বই দেওয়া হবে না মর্মে ঘোষণা দেওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নথুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ইসমাইল বিশ্বাস, ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য ইদ্রিস হাওলাদার ও আলতাফ হোসেন অভিযোগ করেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হানিফ তালুকদার ও প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেনকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা না নেওয়ার অনুরোধ জানালেও তারা সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন বিদ্যালয়ে না থাকায় সহকারী প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন ও টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নেই জানিয়ে এ বিষয় প্রধান শিক্ষকই সঠিক জবাব দিতে পারবেন বলে জানান।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হানিফ তালুকদার বলেন, তিনি বই উৎসব নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি শুনে প্রধান শিক্ষককে টাকা নিতে নিষেধ করেছেন। এরপরেও টাকা নেওয়া হয়ে থাকলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল রঞ্চন চক্রবর্তী বলেন, আমরা জানুয়ারির প্রথম দিনই সকল শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার জন্য সকল বিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছি। বার্ষিক ক্রীড়া বা মাসিক বেতনের সাথে বিনামূল্যে বই বিতরনের কোন সম্পর্ক নেই। তাই উক্ত বিদ্যালয়ের বিষয়ে তদন্তপূর্বক কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থ্য গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ জানুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ