সংলাপের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির সকল বিরোধ নিষ্পত্তি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি নিয়ে যে বিরোধ রয়েছে, তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলতে হবে। কারণ বিরোধ থাকলে পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় না। আর শান্তি প্রতিষ্ঠা না হলে, শান্তি চুক্তির সুফল আসবে না। আর এ চুক্তির ছাতা তলে পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়নের ধারা এগিয়ে যাবে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সনদে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পুনাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তাই সরকারের উপর আস্থা রেখে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে জনসংহতি সমিতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৪০বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকার শান্তি চুক্তির মধ্যেদিয়ে শান্তির ছাতা পার্বত্য চট্টগ্রামের উপর তৈরী করে দিয়েছেন। আর সেই শান্তির ছাতার ছায়াতলে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে। যে কোন উন্নয়নের জন্য শান্তি দরকার। শান্তি না হলে উন্নয়ন সম্ভব না।
তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা সরকার পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শান্তি চুক্তি করেছেন। আর এ চুক্তির মধ্যদিয়ে পাহাড়ের মানুষের মাথার উপর শান্তির ছাতা তুলে ধরেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কি সেই শান্তি ছাতা খোলা রাখবেন? নাকি সেই শান্তি ছাতা গুটিয়ে ফেলবেন। পার্বত্যাঞ্চলের সাধারণ মানুষদের কথা ভেবে পাহাড়ে শান্তির ছাতা খোলা রাখতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই চুক্তিটা কিন্তু রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি। মাঝখানে যখন শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় ছিলেন না, তখন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন। তখন তিনি বলেছেন পার্বত্য চুক্তি বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিবে। এই চুক্তি কিন্তু বাংলাদেশকে ধ্বংস করেনি। খালেদা জিয়ার পরে মঈনুদ্দিন ও ফখরুদ্দিন ক্ষমতায় ছিলেন। তারা কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিকতা দেখায় নাই। এই চুক্তিতে কেউ হাত দিতে পারবে না। এই চুক্তি থাকবে। এ চুক্তির ছাতা তলে পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়নের ধারা এগিয়ে যাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি, পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী এমপি, খাগড়াছড়ি সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রাঙামাটি মহিলা সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি ব্রিগেডের রিজিয়ন কমান্ডার মো. সানাউল হক পিএসসি, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজোরী চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৪০বছর বর্ষপূর্তি কেক কেটে উদ্বোধন করেন। পরে মাউন্টেন বাইক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের চেক তুলে দেন। বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাঙামাটি শহরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালীও বের করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ জানুয়ারি, ২০১৫/মাহবুব