লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আসেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, কার্যালয়সহ পাউবোর ১০টি ভবন কয়েক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে না। দেখার কেউ না থাকায় ভবনগুলোর অধিকাংশ দরজা-জানালা ও ভেতরের মালামাল চুরি হয়ে গেছে।
পাউবোর চাঁদপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রায়পুরে পাউবোর শতাধিক একর ভূমি রয়েছে। প্রায় ২০ একর ভূমিজুড়ে আছে কার্যালয় এলাকা, কলোনি, ওয়ার্কশপ ও রেস্ট হাউস।
গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পাউবোর উপবিভাগীয় কার্যালয় ও কার্যালয় সংলগ্ন দুটি বাসভবন, উপজেলা পরিষদ সড়কে একটি বিশ্রামাগার, কলোনি এলাকায় পাঁচটি ভবন ও দুটি ওয়ার্কশপ ভবন পরিত্যক্ত। এগুলোর অধিকাংশই দ্বিতল ভবন। বাসভবনগুলোর অধিকাংশ দরজা-জানালা চুরি হয়ে গেছে। শুধু পাউবোর কার্যালয় ভবনের কয়েকটি দরজা-জানালা আছে। আর জানালা লোহার গ্রিলও চুরি হয়ে গেছে। কার্যালয়ের ভেতরের বৈদ্যুতিক বাতি, পাখাসহ অন্য মালামালও নেই।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ছয়-সাত বছর ধরে পাউবোর কর্মকর্তারা এ কার্যালয়ে অফিস করেন না। তাই কলোনি, ওয়ার্কশপ ভবন ব্যবহার হয় না। এ সুযোগে একটি মহল শত কোটি টাকার ওই সম্পদ দখলের পাঁয়তারা করছে। দুর্বৃত্তরা ভবনের দরজা-জানালা খুলে নিয়ে গেছে। এ ভবন পরিত্যাক্ত থাকায় মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা প্রতিদিন রাতে আড্ডা জমায়।
পাউবো কার্যালয় সূত্র জানায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি নিষ্কাশন ও বোরো (ইরি) ধানের সেচ সুবিধার জন্য ১৯৭৪ সালে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প (সিআইপি) শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় রায়পুর উপজেলা, হাইমচর, ফরিদগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর, রামগঞ্জ, ও চাঁদপুরের কিছু অংশ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
পাউবোর রায়পুর কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবু ছাঈদ মো. মাহবুবুল করিম, উপসহকারী প্রকৌশলী কামরুল হাসানসহ ১০ জন। কিন্তু তারা কেউ এখানে আসেন না। রবিবার রাতে আবু সাঈদ মো. মাহবুবুল করিম মুঠোফোনে বলেন, তিনি চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের অধীনের ছয়টি উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। তাই কাজের চাপে রায়পুরে যেতে পারেন না। চাঁদপুর অফিস করেন। উপসহকারী প্রকৌশলী কামরুল হাসানকে এটা দেখতে রায়পুরে পাঠাবেন বলে তিনি জানান।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান গতকাল মুঠোফোনে বলেন, পাউবোতে বর্তমানে লোকবল সংকট রয়েছে। তিনি এখানে নতুন এসেছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রায়পুর কার্যালয়ে বসেন না, এটা তার জানা নেই। দরজা-জানালা চুরির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
বিডি প্রতিদিন/৯ জানুয়ারি, ২০১৭/ফারজানা