ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা গড়েয়া ঢাঙ্গীপুকুর এলাকায় এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে আশরাফুল ইসলাম নামের এক যুবক। গত শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই ধর্ষকের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে গত দুই দিন ধরে থানায় রাতযাপন করছেন ওই কিশোরী ও তার মা। সোমবার রাতে ঠাকুরগাঁও সদর থানা ডিউটি অফিসারের কক্ষে একটি বেঞ্চে ওই কিশোরীকে তার মায়ের কোলে মাথা রেখে কাতরাতে দেখা গেছে।
এসময় কিশোরীর মায়ের কাছে জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী কথা বলতে পারে না। গত ২৯ এপ্রিল আশরাফুল ইসলাম নামে এক প্রতিবেশী ধর্ষন করেছে। এলাকার মানুষ ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করতে চাপ সৃষ্টি করছে। তাই ভয়ে মেয়েকে নিয়ে দু'দিন যাবত থানায় অবস্থান করছি।
তিনি আরো বলেন, ওই ধর্ষক আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু ভয়ে বাসায় যেতে পারছি না।
তিনি বলেন, আমার স্বামী ও আমি দিনমজুরের কাজ করি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাড়িতে প্রতিবন্ধী মেয়ে একাই থাকে। প্রতিদিনের মত শনিবার আমরা স্বামী স্ত্রী কাজের জন্য সকালে বের হই। প্রতিবন্ধী মেয়েটি বাসা একা থাকার কারণে দুপুরে প্রতিবেশী আশরাফুল ইসলাম ঘরে ঢুকে জেরপূর্বক ধর্ষন করে। এক পর্যায়ে প্রতিবন্ধী মেয়েটি চিৎকার করতে থাকলে প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে আশরাফুলকে দেখতে পায়। এ সময় লোকজনকে ধাক্কা দিয়ে আশরাফুল দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি এলাকায় জানা জানি হয়ে গেলে আশরাফুল প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করে। মিমাংসা না করায় ওই প্রতিবন্ধী পরিবারকে আশরাফুল নানাভাবে হুমকী প্রদান করেন। কিন্তু প্রতিবন্ধীর মা বিচারের দাবিতে ঠাকুরগাঁও থানায় চলে আসেন।
পরে ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান ওই ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার নির্দেশ প্রদান করেন। রবিবার ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার প্রতিবন্ধীর মা বাদী হয়ে ধর্ষক আশরাফুল ইসলামকে আসামী করে ঠাকুরগাঁও থানায় নারী ও শিশু নির্যাতর দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
প্রতিবন্ধী কিশোরীর মা জানান, ভয়ে বাসায় যেতে পারছি না। আশরাফুলের লোকজন মামলা না করার জন্য নানাভাবে হুমকী প্রদান করছেন। নিজের ও মেয়ের নিরাপত্তার জন্য থানায় আছি।
বিডি প্রতিদিন/২ মে ২০১৭/হিমেল