ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার দক্ষিন চেঁচরী জমাদ্দার হাট বড়ানী খালের ভাঙা ব্রিজের উপরে যুবকরা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছে। এতে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র-ছাত্রীসহ ১৫ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচলের সুব্যবস্থা হয়েছে। যা এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
উপজেলার চেঁচরীরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিন চেঁচরী জমাদ্দার হাটের পার্শ্বের বাড়ানী খালের ব্রিজটি ২০০৭ সালের প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় সিডরে ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘ ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুঁরি ছাড়া এলাকাবাসীর ভাগ্যে ব্রিজের দেখা মেলেনি। ব্রিজটির উত্তর পাড়ে বাজার। দু’পাড়ে ঘেঁষে রয়েছে দু’টি প্রাথমিক ও দু’টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং একটু দূরে রয়েছে আমুয়া শহীদ রাজা ডিগ্রী কলেজসহ কয়েকটি নামী-দামী প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজিয়েট স্কুল ও মাদ্রসা এবং আমুয়া বন্দর।
এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, ১৫ গ্রামের লোকজন ও বাজারমুখি হাজার মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ভাঙ্গা ব্রিজ অথবা নৌকায় পার হয়ে দৈনন্দিন কাজকর্ম করে যাচ্ছে। তাছাড়া এলাকার লোকজন উপজেলা সদর, আমুয়া বন্দর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা ব্রিজ পেরিয়ে ।
৭৪ নং দক্ষিন পূর্ব চেঁচরী জমাদ্দার হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব মো. রেজাউল করিম জানান তিনি প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন সময়ে নিজের খরচে এ ব্রিজের উপরে বাঁশের সাঁকো বহুবার দিয়েছেন। বর্তমানেও তিনি শুপারি গাছ ও বাশঁ দিয়ে সাহায্য করেন।
সেচ্ছাশ্রম দেয়া যুবক মো. হাবিব ঘরামি, মো. নাসির হাওলাদার, মো. আবুল সিকদার, মো. জামাল মিয়া, মো. মন্টু মিয়া ও সবুজ খরাতিসহ অনেকে বলেন- বাড়ানী খালের ব্রীজের দু’পাড়ের স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয় যেতে পারেন এবং জমাদ্দার হাট বাজারের হাজার হাজার লোকজন যাতে সঠিক সময়ে জন্য এলাকা থেকে শুপাড়ি গাছ ও বাশঁ কালেকশন করে সেচ্ছাশ্রমে ব্রিজের উপর সাঁকো তৈরি করে দিয়েছি।
স্থানীয় সংরক্ষিত ইউপি সদস্য রুজি বেগম জানান, এ বাড়ানী খালের ওপর স্থায়ী সেতু নির্মাণের মতো আর্থিক সক্ষমতা ইউনিয়ন পরিষদের নেই। তাই জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় যুবকদের সহায়তা নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ব্রিজের উপরে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। সাঁকো নির্মাণের ফলে এখন ১৫ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ অতি কম সময়ে উপজেলা সদরে ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/২ মে ২০১৭/হিমেল