শরীয়তপুর পৌরসভায় চলছে লুটপাটের মহাউৎসব। ভ্যাট, ট্যাক্স, করদিয়েও কোন উন্নয়নমূলক কাজের সন্ধ্যান পাচ্ছেনা শরীয়তপুর পৌরবাসী। কাজের ক্ষেত্রে চলছে স্বজনপ্রীতি। এর ফলে কোন উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারছেন না শরীয়তপুর পৌর মেয়র।
প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক সুবিধা পাচ্ছেনা শরীয়তপুর পৌরবাসী। নানান সমস্যায় জর্জরিত ৩২ বছরের পুরানো এ পৌরসভায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে বড় বড় গর্ত ,ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য নেই তেমন কোন ডাষ্টবিন ও পয়ঃনিস্কাসনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানির নিচে তলিয়ে যায় পৌর শহরের অধিকাংশ আবাসিক এলাকা। এর ফলে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ।
১৯৮৫ সালে ২৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে শরীয়তপুর পৌরসভা গঠন করা হয়। পরে ১৯৯৬ সালে পৌরসভাটিকে দ্বিতীয় শ্রেণী ও ২০০৫ সালে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় রূপান্তর করে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তারপর দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর অতিবাহিত হলেও উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য কোন ছোঁয়া লাগেনি শরীয়তপুর পৌরসভায়। বর্তমানে পৌরসভাটিতে প্রায় ১ লাক্ষ মানুষের বসবাস। এই জনসংখ্যার ব্যবহারের জন্য পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে কাগজ পত্রে মাত্র ১৫টি ডাষ্টবিন স্থাপন করা হলে চোখে দেখা যায়না এমটাই জানালেন পৌরবাসী।
শরীয়তপুর পৌর শহরের অলিতে গলিতে ময়লা আবর্জনার স্তুপের পচা দুর্গন্ধে নানান সমস্যায় পৌরবাসী। বারবার অভিযোগ করে কোন সমাধান না পেয়ে ক্ষুদ্ধ স্থানীয়রা। ড্রেনেজের ব্যবস্থা নামে মাত্র থাকায় সাধারণ বৃষ্টি হলেই পৌর এলাকার বাড়িঘর, রাস্তাঘাট বৃষ্টির পানিতে তোলিয়ে যায়। এ কারণে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকার রাস্তা মাটির। আবার অনেক এলাকায় নেই রাস্তা-ঘাট। বেশির ভাগ সড়কের দেখা দিয়েছে বড় বড় গর্ত। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে অস্বস্তীকর পরিবেশের।
নতুন করে ড্রেন নির্মান করার জন্য রাস্তার দুইপাশে গর্ত করে রেখেছে। দির্ঘদিন কোন কাজ না করায় প্রায় গর্তের মধ্যে পড়ে আহত হয়েছে অনেকেই। পয়ঃনিস্কাশনের জন্য বিশাল এ পৌরসভায় মাত্র ৪ কিলোমিটার ড্রেন নির্মান করা হয়। দীর্ঘদিন রক্ষাবেক্ষনের অভাবে প্রায় সব ড্রেনই এখন ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ। শহরের পয়ঃনিস্কাশনের বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই হাটু পানির নিচে তলিয়ে যায় পৌরসভার নিরালা, শান্তিনগর, পালং, দাসাত্তা, কলেজ রোড, শিল্পকলা, ঋষিপারাসহ অধিকাংশ আবাসিক এলাকা।
সন্ধ্যার পর আলোর অভাবে পৌর শহর রূপান্তরিত হয় অন্ধকারের ভুতুরে নগরীতে। পৌরসভাকে রাতে আলোকিত করার জন্য ২০০৫ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে ২ হাজার ২ শত ল্যাম্পপোষ্টে বাতি স্থাপানের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এর প্রায় সবগুলোই বিকল হয়ে আছে দীর্ঘদিন।
ময়লা আবর্জনা পরিস্কারের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার কথাও ভাবছে কর্তৃপক্ষ। ড্রেনেজ সমস্যা সমাধানে অর্থনৈতিক সিমাবদ্ধতার পাশাপাশি খাল দখল করাকে দায়ী করলেন শরীয়তপুর পৌর মেয়র মোঃ রফিকুল ইসলাম। সময় মত পৌর কড় পরিশোধ করেও পৌরসভার সুবিধা বঞ্চিত পৌরবাসীর একটাই দাবি অতি দ্রুত শহর উন্নয়নে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কর্তৃপক্ষ।
বিডি প্রতিদিন/৩ মে ২০১৭/হিমেল