আবারো অশান্ত মালিখালী। মালিখালী পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন। পিরোজপুর গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এ ইউনিয়নটি একনামে চেনে পিরোজপুর জেলার মানুষ। এ গ্রামের তিনটি বংশের মধ্যে অধিপত্যের বিরোধে গত ৬ বছরে শতাধিক ঘড়বাড়িতে অংগ্নিসংযোগ, হত্যা, লুটপাটের ঘটনা ও শত মানুষ আহত হবার কারণে মালিখালী নামটি সকলের কাছে পরিচিত। সর্বশেষ মঙ্গলবার এ ইউনিয়নে ৫ টি ঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী-পুরুষসহ আহত হয়েছে ১০ জন।
জানা যায়, মালিখালী গ্রামে বংশীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দাড়িয়া, হাওলাদার ও শেখ বংশের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ওই বিরোধের জের ধরে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে পেনাখালী বাজারে দুই বংশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনার পরের দিন হাওলাদার বংশের লোকজন দাড়িয়া বংশের মিজান দাড়িয়া নামের একজনকে কুপিয়ে জখম করে। এরপর শেখ বংশের নব্য আওয়ামী লীগ নেতা টিপু সুলতানের নেতৃত্বে তার বাহিনী দাড়িয়া বংশের বাড়ী-ঘরে হামলা চালায়। এ সময় টিপু বাহিনীর সন্ত্রাসীরা পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় দাড়িয়া বংশের শতাধিক বসতঘর।
সেদিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ইয়াহিয়া দাড়িয়া ও বাবুল শেখ নামে দুজন নিহত হয় এবং দেড় শতাধিক আহত হয়। ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থরা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থানায় হত্যা মামলাসহ নাজিরপুর থানায় মোট ১০টি মামলা করে। যার মধ্যে ৯টি মামলার প্রধান আসামি টিপু সুলতান। এ ঘটনার পরে এ গ্রামে তিন বংশের মধ্যে ছোট বড় সংহিস ঘটনা প্রায়ই ঘটতে থাকে। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারী সকালে নিজাম নামে একজনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙ্গে দেয় টিপুর লোকজন। এরপর গত মঙ্গলবার সকালে দাড়িয়া বংশের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু দাড়িয়া নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন ঝন ঝনিয়া গ্রামের মুজাহিদ শেখের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় তাদের হামলায় ও আগুনে প্রায় ১০ জন আহত হয়।
মঙ্গলবারের ঘটনার বিষয়ে নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, দু’পক্ষের আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/৩১ মে ২০১৭/হিমেল