ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক ১ম বর্ষের ছাত্রী সুরাইয়া ইয়াছমিন ফরাজী গর্ণা(১৭)’র মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে কাটপট্টি এলাকার গোলাম মোরশেদ জিলানি ওরফে মিলটন আকনের জেদ্দা সেমাই-মুড়ি কারখানায়। সুরাইয়া ইয়াছমিন ফরাজী ঝালকাঠি শহরের উদ্বোধন মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন কাটপট্টি এলাকার আছলাম ফরাজীর মেয়ে।
আছলাম ফরাজী’র দায়েরকৃত এজাহার বরাত দিয়ে জানা গেছে, বিগত দুই বছর আগে একই এলাকার মিলটন আকন’র ছেলে মাঈনুল ইসলাম হিমু (২০) ফুসলিয়ে সুরাইয়া ইয়াছমিন গর্ণাকে গোপনে বিয়ে করে। তখন তার পিতা-মাতা বিবাহ না মেনে নেওয়ায় তারা বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেন। গত তিন মাস আগে থেকে সুরাইয়া ওরফে গর্ণা আছলাম ফরাজীর নিজ বসত ঘরে থাকে, কিছুদিন পুর্বে মাঈনুল ইসলাম হিমু ও তার পিতা এবং মাতা আয়েশা বেগম গর্ণার পরিবারের নিকট ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে সেই দাবীকৃত যৌতুকের টাকা মেয়ের অভিভাবক না দেওয়ায় আক্রোশ বশত গত ৩ ডিসেম্বর বেলা ১১ টার সময় তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সুরাইয়া ইয়াছমিন (গর্ণা)কে হিমু আকন মোবাইলের মাধ্যমে কলেজে যাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে তাদের কাটপট্টি রোডের সেমাই-মুড়ি কারখানার ভিতরে নিয়ে গলা টিপে হত্যা করে পরে তার মুখে তুতে ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। রাতেই প্রধান অভিযুক্ত মাঈনুল ইসলাম হিমুকে আটক করেছে পুলিশ।
মৃতদেহের ময়না তদন্ত শেষে সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ মোঃ গোলাম ফরহাদ প্রাথমিকভাবে মৃতদেহের ঘারে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান।
অপরদিকে ঝালকাঠি থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম জানান, নিহতের পিতা ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দিয়েছে, প্রধান অভিযুক্ত হিমু আকনকে আটক করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সরোয়ার জানান, মামলাটি যেহেতু তদন্তাধীন তাই বিস্তারিত বলা যাবে না তবে প্রধান অভিযুক্ত হিমুকে আটক করা হয়েছে বাকি অন্যান্যেদের আটকের জোড় প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
আটককৃত মাঈনুল ইসলাম হিমু জানান, তার পিতা গোলাম মোরশেদ জিলানি ওরফে মিলটন আকন ঝালকাঠি পৌর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত ৮ নং ওয়ার্ডের সাধারন সম্পাদক ও চেম্বারের সাবেক পরিচালক হওয়ায় তাকে হয়রানী ও সামাজিকভাবে হেয় করার লক্ষে এ মামলা। নিহত সুরাইয়া ইয়াছমিন গর্ণা আত্মহত্যা করেছে আর তার সাথে সাথে ভালবাসার টানে তিনিও বিষ পান করেছিলেন পরে গর্ণা মারা যায় আর মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেওয়ার পর ওয়াশ করে তাকে সুস্থ করা হয় পরে রাত্র আনুমানিক ২ টার সময় ঝালকাঠির পুলিশ গিয়ে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তবে যৌতুকের বিষয়টি মিথ্যা বলে অভিহিত করে হিমু আকন।
এ দিকে নিহত সুরাইয়া গর্ণার মামা রাজু জানান, ৩ ডিসেম্বর কাটপট্টি বাকলাই ফাড়ির বাসিন্দা অভি কর্মকার তাকে জানায়, হিমু আকন ও গর্ণা বিষ খেয়েছে মর্মে তাকে মোবাইলে এসএমএস দেয়া হয়েছে তখন অভির কথা অনুযায়ী সুরাইয়া গর্ণার মামা রাজু ও অভি সেমাই কারখানার ভিতর গিয়ে হিমুকে অচেতন আর সুরাইয়া গর্ণার নিথর দেহ ঘার ভাঙ্গা অবস্থায় দেখতে পেয়ে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষষণা করেন।
বিডিপ্রতিদিন/ ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান