আজ রবিবার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় বাগপাঁচড়া (বর্তমান রুহুল আমিন নগর) গ্রামে ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। নৌ বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় রুহুল আমিন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে ১০ ডিসেম্বর শত্রুদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর বোমার আঘাতে শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ১৯৭১ সালের এপ্রিলে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিএনএস বখতিয়ার ত্যাগ করে ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ২নং সেক্টরে যোগদান করেন। এখানে স্থলযুদ্ধে একাধিকবার তিনি অংশগ্রহণ করে সাফল্য অর্জন করেন। পরে যুদ্ধ জাহাজ ‘পলাশ’র আর্টিফিসার অফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৯ ডিসেম্বর রাতে কোন বাধা ছাড়াই গানবোর্ট ‘পলাশ’ হিরণ পয়েন্টে প্রবেশ করে। ১০ ডিসেম্বর খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছাকাছি পৌঁছলে শত্রু পক্ষের বোমারু বিমান আঘাত হানে। রণতরী ‘পলাশ’ ত্যাগ করে প্রাণ বাঁচানো সহজ ছিলো। কিন্তু বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন তা না করে সম্মুখ যুদ্ধ শুরু করেন। বীরের মতো যুদ্ধ করে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন দেশকে স্বাধীন করার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেন।
২০০৮ সালের প্রথম দিকে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নিজ গ্রামে নির্মাণ করা হয় ‘‘বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন যাদুঘর ও গ্রন্থাগার”। বর্তমানে এখানে প্রায় ৪ হাজারের মতো বই রয়েছে ও তার ব্যহারের কিছু জিনিসপত্র। প্রতিদিন ৭০-৮০ জন পর্যটক বীরশ্রেষ্ঠ সর্ম্পকে জানতে এখানে আসেন।
রুহুল আমিন নগরে বীরশ্রেষ্ঠের নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাদুঘর, লাইব্রেরি, স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন সড়ক। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলো নানা সমস্যা জর্জরিত।
স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও মানবেতর জীবন যাপন করছে তার পরিবারের কয়েক সদস্য। তার ছোট ছেলে শওকত আলী। বাবা বীরশ্রেষ্ঠ হলেও দারিদ্রতা ও অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে স্ত্রী ও একমাত্র শিশু কন্যাকে নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছেন শওকত।
মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রর্দশিত হবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সত্যকারের সম্মান প্রর্দশন এমনটাই প্রত্যাশা সবার। এ উপলক্ষে আজ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন গ্রন্থঘার ও স্মৃতি জাদুঘরের উদ্যোগে আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল ও দুস্তদের মাঝে খাওয়ার বিতরনের আয়োজন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১০ ডিসেম্বর ২০১৭/হিমেল