পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় কিশোরগঞ্জের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলামকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে দিয়েছে আদালত। আজ তাকে কিশোরগঞ্জের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক আব্দুছ ছালাম খান এ আদেশ দেন।
গত ১৭ জানুয়ারি দুর্নীতির মামলায় পিরোজপুর জেলার সার্কিট হাউসের সামনে থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রবিবার তাকে কিশোরগঞ্জে আনা হয়।
উল্লেখ্য, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জে কর্মরত থাকা অবস্থায় ভূমি অধিগ্রহণ খাতের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। পরে তাকে পিরোজপুর জেলায় বদলি করা হয়। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাম প্রসাদ মন্ডল ঘটনার তদন্ত করে গত ১৭ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় সেতাফুল ইসলামকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার ও জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সেতাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জে কর্মরত থাকা অবস্থায় জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় জমি অধিগ্রহণ খাতের পাঁচ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাত করেন। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ভূমি মন্ত্রণালয় এ কাজ করে দেয়। জমি অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। এ জন্যে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে অগ্রিম চেক পাঠাতে হয়। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বর জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে ক্ষতিপূরণের পাঁচ কোটি টাকার একটি চেক ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ জমা দেওয়া হয়। এরপর গত ৬ ও ৭ ডিসেম্বর দুই দফায় ৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা উত্তোলন করেন সেতাফুল ইসলাম। বাকি ৬ লাখ টাকা অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের নামে পাঠানো হয়। অপরদিকে জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে ১০ কোটি টাকার অপর একটি চেক সই করে তা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের জালিয়াতি ধরা পড়ায় ওই চেকটি জেলা প্রশাসনের হেফাজতে নেওয়া হয়।
কিশোরগঞ্জ সোনালী ব্যাংক সূত্রে আরও জানা যায়, গত ৬ ডিসেম্বর ২ কোটি, ৭ ডিসেম্বর ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং একই দিন বাজিতপুর সোনালী ব্যাংক থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আরও ৬ লাখ টাকা তুলে নেন সেতাফুল ইসলাম।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার